নিশ্চিন্ত’ মামুন, শেষমুহূর্তের দৌড় ইমরানের

সীতাকুণ্ড বার্তা প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারি ২০২৪

‘নিশ্চিন্ত’ মামুন, শেষমুহূর্তের দৌড় ইমরানের

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী এস এম আল মামুনের সঙ্গে `হেভিওয়েট’ কোনো প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় অনেকটা ‘নির্ভার’ সময় পার করছিল আওয়ামী লীগ। তবে শেষমুহূর্তে উচ্চ আদালতে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ‘আওয়ামী’ স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মো. ইমরান। এতে ফিরে এসেছে নির্বাচনী আমেজও। আভাস মিলছে প্রতিদ্বন্দ্বিতার।

জানা গেছে, তৃণমূলে মামুনের শক্ত অবস্থান দলকে আরো স্বস্তি এনে দিয়েছে। সীতাকুণ্ড উপজেলা থেকে পরপর দুবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করায় দলীয় নেতা, তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জণগণের কাছে একটি সুপরিচিতি রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম আল মামুনের। এছাড়া তার বাবা ওই আসন থেকে দুবার নির্বাচিত এমপি প্রয়াত এবিএম আবুল কাশেম মাস্টারের ছিল ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বাবার সুবাদে বাড়তি একটি সুবিধাও পাচ্ছেন তিনি। 

নির্বাচনী এলাকার দলটির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ধারণা, নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্যান্য প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মামুনের আশেপাশেও আসতে পারবেন না ! মামুনের সংসদ সদস্য হওয়া অনেকটা নিশ্চিত, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। 

১৯৯১ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি থেকে বিজয়ী হন সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী প্রয়াত এলকে সিদ্দীকি। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার এই আসনে এবিএম আবুল কাশেম মাস্টারের হাত ধরে জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২০০১ এর নির্বাচনে বিজয়ী হন চার দলীয় জোটের প্রার্থী প্রয়াত এলকে সিদ্দীকি। ২০০৮ সালে আবারও বিজয়ী হয় নৌকা। সেবারও দলীয় প্রার্থী ছিলেন প্রয়াত আবুল কাশেম মাস্টার। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। এই দুবার দলটির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন দিদারুল আলম। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বর্তমান এমপি দিদারুল আলমসহ বেশ কিছু প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা মনোনয়ন চাইলেও দলীয় মনোনয়ন পান এস এম আল মামুন। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

তবে শেষমুহূর্তে এসে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মো. ইমরান। ঈগল মার্কা নিয়ে লড়ছেন তিনি। ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে গরমিল পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং  কর্মকর্তা। এরপর নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখানেও তার প্রার্থিতা বাতিলের পক্ষে রায় দেন কমিশন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান। ফলে অনেক দেরিতে প্রচারণায় আসেন তিনি। প্রথম থেকে প্রচারণায় থাকলে আরও বেশি আলোচনায় থাকতেন ইমরান। 

সর্বমোট ৯ জন প্রার্থী এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী এস এম আল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন ইমরান ও জাতীয় পার্টির দিদারুল কবীর ছাড়া অন্য প্রার্থীদের পোস্টার, মাইকিংসহ প্রচারণা তুলনামূলক কম। এখানে এখনো পর্যন্ত নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের তেমন অভিযোগ উঠেনি। তবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে কারণ দর্শাতে বলা হয় উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নব বিবি জলিকে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মুচলেকা দিয়ে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।

সীতাকুণ্ড আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ২৭  হাজার ১৭২ জন। আসনটি উপজেলার একটি পৌরসভা, ৯টি ইউনিয়ন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাহাড়তলী ও আকবরশাহ (৯ ও ১০) এই দুটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। মোট ১২৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *