করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেশনে থাকতে বলা হচ্ছে। মৃদু উপসর্গ আছে, এমন বেশির ভাগ রোগী বাড়িতে আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা নিয়ে সেরে উঠছেন। তবে শুধু চিকিৎসা নয়, আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস আর খাবার পরিবেশনের পদ্ধতির দিকে নজর দেওয়াও ভীষণ জরুরি।
করণীয় দিক :>
১. করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি একটি আলাদা ঘরে থাকবেন। বাড়িতে ঘরের স্বল্পতা থাকলে একই ঘরে আলাদা পর্দাঘেরা কোনায় থাকবেন। খাওয়ার সময় বাড়িতে সদ্য তৈরি খাবার তাঁর দরজার কাছে কেউ একজন রেখে আসবেন। তবে এ ক্ষেত্রে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পালন করবেন বাড়ির সবচেয়ে সুস্থ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিটি। তিনি খাবার দেওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করবেন।
২. করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির প্লেট, গ্লাস, চামচ ও অন্যান্য ব্যবহার্য তৈজসপত্র সম্পূর্ণ আলাদা থাকবে। এসব জিনিস প্রতিবার ব্যবহারের পর গ্লাভস পরে ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে পরিষ্কার করে অন্যদের থালা-বাসন থেকে আলাদা করে রাখতে হবে।
৩. আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। বাড়িতে পরিচ্ছন্নভাবে ফোটানো বিশুদ্ধ পানি পরিষ্কার বোতলে ভরে তাঁর ঘরে দিন। জ্বর থাকলে আরও বেশি পানি পান করতে হবে। ডাবের পানি, ফলের রস, লেবুপানি ইত্যাদিও দেওয়া যায়।
৪. এ সময় যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। খাবারে মাছ, মুরগি, ডাল ও বীজজাতীয় খাবার, দুধ, ডিম ইত্যাদি থাকা চাই। এসব খাবার শক্তি জোগাবে ও ক্লান্তি দূর করবে। প্রচুর শাকসবজি ও ফলও খেতে হবে। ডায়াবেটিস বা কিডনির জটিলতা থাকলে খাবারে যেসব বিধিনিষেধ আছে, তা মেনে চলবেন।
৫. খাবারে যথেষ্ট ভিটামিন সি, বি৬, এ, ডি, জিঙ্ক, ফলেট, আয়রণ ও আঁশ থাকা দরকার। সে কারণে রোজ পর্যাপ্ত রঙিন শাকসবজি, ফলমূল, গাজর, মিষ্টি আলু, পালংশাক, লেটুস, টমেটো, পেঁপে, কমলা, মালটা, লেবু, পেয়ারা, আম ইত্যাদি খাবেন। এ ছাড়া বাদাম, আখরোট, খেজুর, দই ইত্যাদি খেতে পারেন।
৬. কাশি বা গলাব্যথা থাকলে মধু, মধু ও দারুচিনি-লবঙ্গ-আদামিশ্রিত গরম পানি বা লেবু-আদা-মধুমিশ্রিত লিকার চা, মুরগির গরম স্যুপ ইত্যাদি বারবার দিন। দারুচিনি, গোলমরিচ, কালিজিরা ইত্যাদিও কাশি, গলাব্যথা কমাতে সহায়ক।
৭. চিনিযুক্ত পানীয়, কেক, পেস্ট্রি ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি। সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, বেশি তেলে ভাজা-পোড়া খাবারও দেবেন না রোগীকে। তাঁর খাবার সহজপাচ্য হওয়া চাই। কারণ, করোনা রোগীর হজমে সমস্যা, ডায়রিয়া, বমি হওয়াও বিচিত্র নয়। অরুচি বা ক্ষুধামন্দা থাকলে অল্প পরিমাণে খাবার বেশ কয়েকবারে দিন।
সূত্র দৈনিক চট্টগ্রাম