সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১টি দোকান ও ৭টি গোডাউন পুড়ে ছাই

 সীতাকুণ্ড বার্তা প্রতিনিধি

কাল হলো ‘মেলার গেট’, আগুনে পুড়ল দেড় কোটি টাকার সম্পদ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১টি দোকান ও ৭টি গোডাউন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে অন্তত দেড় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের। তবে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ফায়ার সার্ভিসের উপর দেরি করে আসার দোষ চাপালেও ফায়ার সার্ভিস বলছে— মেলার জন্য নির্মিত গেটের কারণে তাদের গাড়ি প্রবেশে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার পৌর সদরের কলেজ রোডে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর দিদারুল আলম অ্যাপোলোর মালিকানাধীন জায়গায় অবস্থিত বিশ্বজিত ফোম সেন্টার নামের একটি লেপ তোষকের গোডাউনে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই তা আশপাশের কয়েকটি দোকান ও গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও তার আগেই ১১টি দোকান ও ৭টি গোডাউন সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার তিন লাখ টাকার বাদ্যযন্ত্র সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। একটা জিনিসও আগুন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এই দোকানটাই আমার একমাত্র সম্বল ছিল। এখন আমি কোথায় যাব কি করব কিছু বুঝতে পারছি না।’

পুড়ে যাওয়া দোকানের মালিক ও স্থানীয় কাউন্সিলর দিদারুল আলম অ্যাপোলো বলেন, ‘তোষকের একটি দোকানের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার কথা শোনা যাচ্ছে। প্রতি বছর একবার করে এ পর্যন্ত পর পর তিন বছর এই দোকানগুলো আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এবারের আগুনে আমার ও ব্যবসায়ীদের অন্তত দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

তবে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দেরি করে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসে সাড়ে সাতটার দিকে। একই ওয়ার্ডে ফায়ার সার্ভিসের অফিস অবস্থিত হলেও ফায়ার ইউনিট আসতে এত দেরি হওয়ায় বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারা দ্রুত এলে হয়তো অনেক কিছুই বাঁচানো যেত।’

এদিকে গাড়ি প্রবেশে দেরি হওয়ার কথা স্বীকার করে ফায়ার সার্ভিসের সীতাকুণ্ড অফিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল বলেন, ‘আমাদের গাড়ি খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তবে সীতাকুণ্ড কলেজ রোডের মুখে প্রবেশের সময় মেলার জন্য নির্মিত বাঁশের গেটের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনেক কষ্টে-কৌশলে গাড়ি প্রবেশ করাতে গিয়ে কিছুটা সময় নষ্ট হয়।’

মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, ‘সামনে দোল পূর্ণিমা আসছে; এজন্য বাঁশের গেটটা এখনো রাখা হয়েছে। দোল পূর্ণিমা মেলার পরে গেটটা খোলার কথা রয়েছে। তবে দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। এধরনের দুর্ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি; তাই আমাদের এ বিষয়ে কোন ধারণাই ছিল না। তবে দোল পূর্ণিমা পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা থাকলেও এ ধরনের দুর্ঘটনার কথা চিন্তা করে গেটটা খুলে ফেলা হবে কিনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *