চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অনুমতি ছাড়াই চলছে র‍্যাপেলিং , দুর্ঘটনার শঙ্কা

চন্দ্রনাথ ধামে শম্ভুনাথ মন্দিরের পরে একটি সু – উচ্চ খাড়া পাহাড় রয়েছে । বিরুপাক্ষ মন্দিরের আনুমানিক ৩০০ ফুট উঁচু খাড়া এ পাহাড়টির একদিকে তেমন কোনো গাছপালা নেই । সোজা উপরে চলে যাওয়া এই পাহাড়ের দুইপাশে রয়েছে গভীর খাদ । খাদটি হারিয়ে গেছে ঘন বনের অন্ধকারে । এই খাড়া – উঁচু পাহাড়টিতে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে দড়ি বেঁধে ঝুলে ঝুলে উঠছে কিছু অতি কৌতূহলী তরুণ । কোনরকম নিরাপত্তার সু ব্যবস্থা ছাড়াই অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কয়েকজনকে দড়িতে ঝুলতে ঝুলতে এই উঁচু পাহাড়ে উঠতে দেখা গেছে । নানা এডভেঞ্চারের গল্প শুনিয়ে তারা আরো তীর্থ যাত্রী ও অন্য পর্যটকদের এভাবে দড়িতে ঝুলে পাহাড়ে উঠতে উৎসাহ যোগাচ্ছে । সম্প্রতি বেশ কিছু আইডি থেকে এ ধরনের প্রচারণার লেখা ও ছবি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন বিভিন্ন মহল । তারা সেখানে যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন । সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথের বীরুপাক্ষ মন্দিরে বহিরাগতদের অনৈতিক ও ধর্মীয় উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড মন্দির কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ সনাতন চট্টগ্রাম অফিস ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান তীর্থভূমি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধাম পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে র‍্যাপেলিং ( দড়িতে ঝুলে পাহাড়ে উঠা ) । স্থানীয় প্রশাসন ও মন্দির কমিটির কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়ে ফেসবুকভিত্তিক কয়েকটি ট্যুরিস্ট গ্রুপ এই পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই ধরনের এডভেঞ্চার শুরু করেছে । এতে যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা । এছাড়া তীর্থস্থানে পিকনিকের নামে তাবু খাটিয়ে রাত্রিযাপন , মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করে বারবিকিউ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসদরে অবস্থিত চন্দ্রনাথ ধাম পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ঘিরে এখন ভ্রমণপিপাসু মানুষের আনাগোনা ক্রমশ বাড়ছে । এই পাহাড়ের আঁকা বাঁকা মেঠো পথ , প্রাকৃতিক ঝর্ণার রূপবৈচিত্র্য এখানে আসা তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের মুগ্ধ করে । প্রতিদিন এখানে তীর্থ দর্শনার্থীদের পাশাপাশি জাতি – ধর্ম নির্বিশেষে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটে । এদিকে পর্যটকদের এই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকভিত্তিক কিছু ট্যুরিস্ট গ্রুপ এখানে নানারকম ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া দিয়েছে সকল স্তরের সনাতনী সম্প্রদায় নামে একটি সংগঠন । অভিযোগপত্রে তারা বলেন , সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্যাকেজ ঘোষণা করে মন্দিরের পাহাড়ে তারা তাবু দিয়ে রাত্রিযাপন করছে এবং সেখানে মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করে বারবিকিউ করছে । সেইসঙ্গে তারা বীরুপাক্ষ মন্দিরের পাহাড়ের ৩০০ ফুট উঁচু থেকে দড়ি বেয়ে নিচে নামছে । ড্রোন দিয়ে পুরো পাহাড় নজরদারি করছে । এটা আমাদের মন্দিরের জন্য হুমকি বলে মনে করছি আমরা । এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে তারা সনাতনী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন । জানা গেছে , ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ নামের একটি আইডিতে দড়িতে ঝুলে পাহাড়ে উঠার কিছু ছবি পোস্ট করেন মোহাম্মদ হাসান ফরহাদ নামে এক তরুণ । একই গ্রুপে শিহাব উদ্দিন নামে একজন ছবি পোস্ট করে লেখেন- লোকেশন : বীরুপাক্ষ মন্দির , চন্দ্রনাথ ধাম পাহাড় । বেঙ্গল ট্রেকার্স নামক একটি গ্রুপে মুহেমেনুল ইসলাম একই ধরনের ট্যুরের কথা লেখেন । জনপ্রতি ফি উল্লেখ করা হয় ৫৫০০ টাকা । এভাবে নানা এডভেঞ্চারের গল্প শুনিয়ে ভ্রমণপিপাসু তরুণদের টানছে বিভিন্ন ট্রাভেল গ্রুপ । যার কোনো অনুমোদন প্রশাসনের নেই ।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *