শ্বশুরের কাছ থেকে মোটরসাইকেল পাচ্ছেন লেডি বাইকার নববধূ

সীতাকুণ্ড বার্তা;

গায়ে হলুদের দিনে শহর জুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও সাথীদের নিয়ে বাইক র‌্যালি করলেন কনে।ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে ফেসবুকে ভাই’রাল হয়েছেন যশোরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ। গত ১৩ আগস্ট গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানকে ঘিরে এমন আয়োজন করেন ফারহানা। ফারহানা জানালেন, এমন অনুষ্ঠান সবাই নেচেগেয়ে উদযাপন করে। আমি যেহেতু বাইক চালাতে পারি। তাই বাইক চালিয়েই অনুষ্ঠান করি। ব্যতিক্রমী কিছু করার ভাবনা থেকেই তিনি এমন আয়োজন করেছেন।

ফারহানা আফরোজের বাড়ি যশোর সার্কিট হাউজের সামনে। যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে যশোর আব্দুর রাজ্জাক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এখন তিনি ডেফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে এইচআর’এ এমবিএ করছেন। ফারহানা আফরোজ জানান, ২০০৭ সাল থেকে তিনি বাইক চালান। তাই বিয়ের অনুষ্ঠানকে ব্যতিক্রমী করতে ভিন্নধর্মী ভাবনা তার মাথায় ছিল। এ ভাবনা থেকেই তিনি এমন আয়োজন করেছেন।

বিয়ে, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সবাই নেচে গেয়ে উৎসব করে। আমি যেহেতু বাইক চালাতে পারি। তাই বাইক চালিয়েই এ’ন্ট্রি দেয়ার পরিকল্পনা করি। গত ১৩ আগস্ট ছিল ফারহানার গায়ে হলুদ। পরদিন ১৪ আগস্ট তার বিয়ে হয়েছে। ছেলে হাসনাইন রাফি পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফি ঢাকার গাজীপুরে কর্মরত আছেন।

তিনি আরো বলেন, ২০০৭ সাল থেকে বাইক চালাই। মূলত বাড়িতে সাইকেল ও প্রাইভেটকার চালানো শেখা হয় ছোটবেলাতেই। বাবার মোটরসাইকেলটিও চালানোর একটা ঝোঁক ছিল। তাই বাবার অজান্তেই কোন প্রশিক্ষক ছাড়াই মোটরসাইকেল চালানো শিখি। ২০১৩ সালে ঢাকায় আসার পর বন্ধুদের বাইকে হাত পাকাই। এরপর নিজে স্কুটি কিনি। ওই স্কুটিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করি।
 
ফারহানা আরো বলেন, বাইক র‍্যালির ছবি ফেসবুকে আসার পর শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন। তারা আমার বাইক চালানোর বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। ফলে তারা ছবি ও ভিডিও দেখে বেশ আনন্দ করেছে। কিন্তু নেটিজানরা বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে পারছে না। তারা আমার চারিত্রিক সনদ দিচ্ছেন। এটা আমি মানতে পারছি না। যে কারণে ছবি ভাইরাল হবার পর আমি নিজেই বাইক র‌্যালির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করি।
তিনি আরো বলেন, সুযোগ পেলে আমি হেলিকপ্টার চালানোও শিখতাম। আমি সবকিছুই চালানো শিখতাম। স্বামীর পক্ষ থেকেও কোনপ্রকার আপত্তি নেই।
 
তবে তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ফারহানা তাকে সংবাদমাধ্যমে না টানার জন্য অনুরোধ করেন। তার স্বামী হাসনাইন রাফি বর্তমানে ঢাকার গাজীপুরে কর্মরত। ফারহানাও শিগগিরই ঢাকা যাবেন। এবং শ্বশুরের প্রতিশ্রুত মোটরবাইকটি ঢাকা থেকেই কিনবেন।
 

এ বিয়ের অনুষ্ঠান ক্যামেরায় ধারণ করা নাহরুল হায়াত তরু (খান সাহেব) জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ক্যামেরায় কাজ করছেন। কিন্তু এমন ব্যতিক্রমী বিয়ে ও গায়ে হলুদের আয়োজন দেখেননি। এ গায়ে হলুদের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই তার কাছে ফোন করছেন।

 


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *