আশঙ্কাজনক হারে আক্রান্ত হচ্ছেন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা

রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। কয়েকটি হাসপাতালে এ সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। কর্তৃপক্ষ বলছেন, আক্রান্তের সংখ্যা আরো বাড়লে সংকট দেখা দিতে পারে চিকিৎসা সেবায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা শয্যা রয়েছে ছয়শো, শনিবার পর্যন্ত রোগী ভর্তি সাড়ে চারশো। করোনা রোগী ছাড়াও প্রতিদিন নানা জটিলতা নিয়ে ভর্তি হচ্ছে নতুন রোগী।
করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের সাথে আক্রান্ত হচ্ছে হাসপাতালটির ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ অন্যান্যরা। ঢাকা মেডিকেল ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এক তৃতীয়াংশ চিকিৎসক ও কর্মী করোনা আক্রান্ত।

হাসপাতালের কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে বহির্বিভাগে সেবা নেয়াদেরও করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তারপরও সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এ হার আরও বাড়লে চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ার শঙ্কা কর্তৃপক্ষের।
বিএমএর হিসাবে করোনা শুরুর পর থেকে দেশে ৩১৪৭ চিকিৎসক, নার্স ২৩১৯ এবং ৪০৭৯ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছে।

এদিকে, দেশে সাত দিনেই প্রায় এক লাখ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রতি মিনিটে করোনা শনাক্ত হচ্ছে ৯ জনের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মৃত্যুও দ্বিগুণ হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দুই সপ্তাহ পরে কমতে পারে সংক্রমণ।

রাজশাহীতে শুক্রবার ৪২৫ নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় ৩১৭ জনের। অর্থাৎ পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭৪ ভাগ। শনিবারও ১৮৬ নমুনা পরীক্ষায় ১২০ জনের করোনা ধরা পড়ে। শনাক্তের হার ৬৪ ভাগ।
দেশের ১৮টি জেলায় এখন করোনা শনাক্তের হার চল্লিশ শতাংশের বেশি। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ। রাজধানীতেও পঞ্চাশের বেশি শনাক্তের হার অনেক ল্যাবে। রোগী বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে।

দেশে সাত দিনেই করোনা শনাক্ত প্রায় এক লাখ মানুষের। এখন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ডিসেম্বরের পুরো মাসে শনাক্তের চেয়েও দেড় গুণ বেশি। প্রতি মিনিটে করোনা শনাক্ত হচ্ছে ৯ জনের। আর গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১২০ জন। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৭৩।

করোনা নিয়ন্ত্রণে গত ১০ জানুয়ারি ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু নেই এর বাস্তবায়ন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আরও দুই সপ্তাহ বাড়তে পারে সংক্রমণ।

দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড ডেডিকেটেড শয্যা ২১ হাজার। রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৮০০ বেডে।

দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে এখনও উদাসীন মানুষ। রাজধানীর অনেক বাসেই মানা হচ্ছে না বিধিনিষেধ।

রোববার সকালে বাসগুলোতে অফিসগামীদের অনেকের মুখে ঠিকমতো দেখা যায়নি মাস্ক। কোনো কোনো বাসচালক ও হেলপারের থুতনিতে মাস্ক থাকলেও টিকা নেয়ার সনদ পাওয়া যায়নি কারো কাছে।

তবে, এসব নিয়ন্ত্রণে নেই পর্যাপ্ত তদারকি ব্যবস্থা। এছাড়া বাসে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা।

স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতেও। ক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বিক্রেতাদের বেশিরভাগই ঠিকমতো ব্যবহার করছে না মাস্ক।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *