চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার নয়াবাজার এলাকায় রাতে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ভোরে ছুরিকাঘাতে যুবককে খুনের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (২৯ মে) রাঙামাটি জেলার কোতয়ালী থানা একটি আবাসিক হোটেল থেকে ও নগরের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন— আবুল হাসনাত রানা (৩০), দেলোয়ার হোসেন জয় (২৭), আবু তাহের রাজীব (২৩) এবং মো. রায়হান সজীব (২২)।
র্যাব জানায়, গত ২৮ মে দিবাগত রাতে নগরের নয়াবাজার এলাকার একটি কারখানার গেটের সামনে এক যুবক প্রস্রাব করলে আজাদুর রহমানের বড় ভাই কারখানার নৈশপ্রহরী মফিজ তাকে বাধা দেন। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবক নৈশপ্রহরী মফিজকে ‘এটা সরকারি জায়গা তুই বাধা দেওয়ার কে’ বলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আসামি আবু তাহের রাজীব, ওসমান, আবুল হাসান জায়গায় এসে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। বড় ভাইয়ের (মফিজ) সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাদুর রহমান ঘটনাস্থলে যায়। এসময় আসামিরা তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি করে। পরবর্তীতে আসামিরা দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
পরে ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল থেকে নিজের ফুফুকে দেখে বাড়ি ফেরার সময় নাস্তা কিনতে বিশ্বরোডের মুখে দাঁড়ায়। এসময় আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এলোপাতাড়ি পেটে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে আজাদের পেটের ভুরি বের হয়ে যায়। সেখান থেকে সে কোনো রকমে বাড়ির সামনে আসে এবং সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটে পরে। এসময় তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে নেয়ার পথে মুমূর্ষ অবস্থায় হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করেন আজাদ। পরে আজাদের স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদি হয়ে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওসমান, রাজীব, রাজু ও ফয়সাল নামে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায় আসামিরা। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাঙামাটি জেলার কোতয়ালী থানার একটি আবাসিক হোটেল থেকে আবু তাহের রাজীব, দেলোয়ার হোসেন জয়, মো. রায়হান সজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আবুল হাসনাত রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার করা চারজনের মধ্যে তিনজনের নামই মামলার এজাহারে নেই। প্রাথমিক তদন্তে তাদের সম্পৃক্ততা পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।