
সীতাকুণ্ড বার্তা;
ভারতের হাথরস কাণ্ডের ঘটনা টনক নড়িয়ে দিয়েছে ভারতবাসীর। নৃশংস্যতার নজির নিয়ে সরব হয়েছেন আপামর মানুষ থেকে ফায়দা তুলতে চাওয়া রাজনৈতিক দলগুলিও। আর এই হাথরস কাণ্ডের ঘটনায় মানষিকভাবে ভীষণ নাড়া দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরার একটি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষককেও।
গুসকরার গোবিন্দপুর সেফালি মেমোরিয়াল পলিটেকনিক কলেজের ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট সৈয়দ মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, হাথরস কাণ্ডের পরই তিনি কিভাবে মহিলাদের ওপর যৌন হেনস্থার হাত থেকে রক্ষা করা যায় কিংবা তাঁদের ওপর আচমকা যে ধরণের আক্রমণের ঘটনা ঘটে তার থেকে কিভাবে তাঁরা রক্ষা পেতে পারেন তা নিয়ে তিনি ভাবনাচিন্তা তৈরি করেন।
আর এরপরেই তিনি আবিষ্কার করেছেন বিশেষ ধরণের জুতো। যে জুতোর মধ্যে থাকছে বিশেষ ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস। জুতোয় থাকছে সুইচ। যখনই কেউ আক্রান্ত হবেন সঙ্গে সঙ্গে সুইচ অন করলেই সেখান থেকে নির্দিষ্ট ৫টি ফোন নাম্বারে একসঙ্গে বিপদসূচক বার্তা পৌঁছাবে।

হুগলির ব্যাণ্ডেলের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বি-টেক নিয়ে পড়াশোনা করেছেন মোশারফ হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হায়দরাবাদের সিদ্ধার্থ মণ্ডল নামে এক ছাত্র মহিলাদের সুরক্ষায় জুতোয় বিশেষ ডিভাইস বসিয়ে নয়া আবিষ্কার করলেও সেখান থেকে এসওএস পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা ছিল না।
কিন্তু মোশারফ হোসেন যে আবিষ্কার করেছেন তার মাধ্যমে একাধিক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত আততায়ী আক্রমণ করার সঙ্গে সঙ্গে প্রতি ২ সেকেণ্ড অন্তর এই ডিভাইসের মাধ্যমে ১২০০ ভোল্টের বিদ্যুত পরিবাহিত হবে তার শরীরে। স্বাভাবিকভাবেই তার দ্বারা আততায়ী ছিটকে পড়তে পারেন। একইসঙ্গে আধুনিক জিপিএস পদ্ধতির মাধ্যমে ঘটনাস্থলের পূর্ণ বিবরণ পৌঁছাবে প্রতি ৩০ সেকেণ্ড অন্তর ৫টি মোবাইল নম্বারে।
স্বাভাবিকভাবেই কোথায় মহিলা আক্রান্ত হচ্ছেন সে ব্যাপারে প্রায় পূর্ণ বিবরণ থাকছে ওই টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে। মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিনি তাঁর এই আবিষ্কারের জন্য পেটেন্টের দাবি জানিয়েছেন ডবলু বি এস সি এস টিতে। আর মোশারফ হোসেনের এই আবিষ্কারে বেজায় খুশী তাঁর পরিবার।
ইতিমধ্যেই এব্যাপারে তিনি তাঁর বোনের মাধ্যমে পরীক্ষাও সেরে নিয়েছেন। পশ্চিম বর্ধমানের লাউদহার তিলাবনি গ্রামের সৈয়দ মোশারফ হোসেনের এই আবিষ্কার আগামী দিনে মহিলাদের কতটা সুরক্ষিত করতে পারে এখন তার দিকেই তাকিয়ে দুই বর্ধমান।