সীতাকুণ্ড বার্তা;
প্রেমের সম্পর্কগুলো এক পর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে রুপ নিবে। এটা যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় লিভ টুগেদার বা বিয়ে ছাড়াই একসঙ্গে থাকাও যেন খুবই সাধারণ বিষয়। সময় ভালোই কাটে। কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখন যখন সম্পর্ক ভেঙে যায়। অর্থাৎ ব্রেকআপ হয়। ব্রেকআপ হলেই সম্পর্ক থাকাকালীন মেলামেশা হয়ে যায় ধর্ষণ। আর হয়রানির শিকার হন পুরুষরা।
ভালোলাগা থেকে ভালোবাসার একপর্যায়ে একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন রিয়ান ও প্রিয়া (ছদ্মনাম)। তবে শুরু থেকেই রিয়ান প্রিয়াকে বলে আসছিলেন, তার বাবা-মায়ের আর কোনো সন্তান নেই। সে ক্ষেত্রে বাবা-মা যদি রিয়াকে পছন্দ করেন, কেবল সে ক্ষেত্রেই তাদের বিয়ে হবে, অন্যথায় সম্পর্কের ইতি টেনে নিতে হবে তাদের।
এভাবেই একবছর পার হয়ে যায়। হঠাৎ বাড়ি যান রিয়ান। প্রিয়াকে জানান, তার পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই বিয়ে।
অন্যদিকে প্রিয়া দিল্লি পুলিশের কাছে রিয়ানের নামে অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রিয়ান তাকে গত এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েছিল বলেই তিনি রিয়ানের সঙ্গে বিছানায় গেছেন, অন্যথায় যেতেন না।
তবে রিয়ানের দাবি, আমি এ ধরনের প্রতিশ্রুতি কখনোই দেয়নি। আর সম্মতির ভিত্তিতে ধর্ষণ হয় কীভাবে? সেটাও আবার এক বছর ধরে!
এদিকে সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রুল জারি করে যে, কোনো নারী সম্মতির ভিত্তিতে এক সঙ্গে বসবাসের পর ওই পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করতে পারবেন না। এমনকি ওই পুরুষ যদি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়, সে ক্ষেত্রেও এ ধরনের অভিযোগ করার সুযোগ নেই।
অথচ এরইমধ্যেই রিয়ানের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে। ছেলে ধর্ষণে অভিযুক্ত হওয়ার খবর শুনে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন রিয়ানের মা। রিয়ানের চাকরিটাও চলে গেছে। তার বাগদত্তাও বিয়েতে না করে দিয়েছেন। পরিচিতজনরাও তার দিকে বাঁকা চোখে তাকায়।
ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, ২০১৬ সালে ৩৮ হাজার ৯ শত ৪৭টি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণের।
আইনজীবী বিনয় শর্মা বলেন, কোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেই নারীরা ধর্ষণের অভিযোগ করছেন। কেউ কেউ আবার টাকার লোভে অভিযোগ করছেন। কিছুদিন আগেই পাঁচ লাখ রুপির বিনিময়ে এক নারী এ ধরনের অভিযোগ তুলে নিয়েছেন।
ভুয়া অভিযোগের কারণে, পারিবারিকভাবে সম্মানহানি যেমন হয়, বিপুল পরিমাণ অর্থও ধসে যায় অভিযুক্তের। একজন গবেষক ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ২০১৩ সালে গবেষণা করেছেন, তিনি দেখেছেন, এক তৃতীয়াংশ নারী সম্পর্কের অবণতি ঘটে যাওয়ার পর ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন।
পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুরুষরা যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও থাকেন , দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে বসবাসের পর তারা কি সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন না?