চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
মানুষের কর্মকাণ্ডে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব সেটি স্থানীয় কিংবা আঞ্চলিক সমস্যা নয় বরং এটি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, পুরো পৃথিবীটাই মূলত একটি গ্রামের মতো, গ্রামের কোন একটি অংশ যদি ভালো না থাকে তবে গ্রামের কেউ এককভাবে ভালো থাকতে পারবে না । তাই পুরো পৃথিবীকে একসাথে হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগগুলো মোকাবেলা করতে হবে। একইভাবে পাহাডধসের মতো দুর্যোগগুলো মানুষেরই তৈরি, মানুষের কার্যক্রমের ফলে প্রকৃতির যে ক্ষতি হচ্ছে সেটির ফল স্বরুপ পাহাড়ধসের মতো দুর্যোগগুলো হচ্ছে। আমাদের মানতে হবে প্রকৃতি মায়ের মতো , মায়ের বদদোয়া নিয়ে আমরা যেমন জীবনে অগ্রসর হতে পারব না , তেমনি প্রকৃতির স্বরুপ মায়ের অভিশাপ আমাদের জন্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিকারক হবে। জিএফএফও অর্থায়নে ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহায়তায় বাস্তবায়িত
“Child centred anticipatory Action for Better Preparedness of Communities and Local in Northern and Coastal Areas of Bangladesh ” প্রকল্পের উদ্যোগে বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি. চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ (ইউআরপি) ও ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন ইপসা আয়োজিত
“নলেজ এক্সচেঞ্জ এণ্ড শেয়ারিং ওয়ার্কশপ চাইল্ড এন্ড ইয়ুথ এনগেইজমেন্ট ইন ল্যান্ডসাইড এন্টিসিপেটরি এ্যাকশন ” শীর্ষক কর্মশালায় চুয়েট ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত মতামত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ এর ডীন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইপসার পরিচালক (সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট) মিসেস নাসিম বানু। অনলাইনে যুক্ত হয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সেভ দ্য চিলড্রেন ম্যানেজার ( এন্ট্রিসিপেটরি এ্যাকশন) জাবেদ মিয়াদাঁদ, কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন চুয়েট- নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব দেবাশীষ রায় রাজা। কর্মশালার শুরুতে ইপসা ও সেভ দ্য চিলড্রেন প্রকল্প কার্যক্রম, পাহাড়ধস ও এন্ট্রিসিপেটরি এ্যাকশন বিষয়ক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সেভ দ্য চিলড্রেন সি. অফিসার আফ্রিদা নাজিফা, পাহাড়ধসের কারণ ও সামগ্রিক প্রভাব নিয়ে প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. রাকিবুল হাসান কাউছার, পাহাড়ধসের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট অভিযোজন ও প্রশমন বিষয়ে সেশন পরিচালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ( URP) ইশরাত জাহান, ল্যান্ডস্লাইড সাসেপটিবিলিটি ম্যাপিং বিষয়ে সেশন পরিচালনা করেন সহযোগী অধ্যাপক (ইউআরপি) দেবাশীষ রায় রাজা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রভাষক সজীব সরকার। চুয়েট ও ইপসা সমন্বিত চাইল্ড এন্ড ইয়ূথ প্লাটফর্ম বিষয়ক আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন ইপসার প্রজেক্ট ম্যানেজার ( এন্ট্রিসিপেটরি এ্যাকশন) সানজিদা আক্তার। উল্লেখ্য, উল্লেখিত প্রকল্প কাজের অংশ হিসেবে প্রাথমিক ভাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও বাঁশখালী উপজেলার সল্প সংখ্যক শিশু ও যুবদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে শিশু ও যুব প্লাটফর্ম। পরবর্তীতে এটি চট্টগ্রাম শহর ও বাঁশখালী উপজেলায় সামগ্রিকভাবে বিস্তৃতি লাভ করে, চুয়েট শিক্ষার্থীদের কেও এই প্লাটফর্মটির সাথে যুক্ত করে প্রকল্পের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় পাহাড়ধসের কারণ, পাহাড়ধসের প্রেক্ষিতে সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা, Anticipatory action কি হতে পারে বিশেষ করে শিশু ও যুবগোষ্ঠী কি ধরণেত ঝুঁকি মোকাবিলা করছে, তাঁরা কি ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে, এছাড়াও ভূপ্রকৃতি রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিঘাত মোকাবিলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে এডভোকেসী, বিশেষত স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায় এন্ট্রিসিপেটরি এ্যাকশন প্ল্যান, প্রটোকল তৈরিতে তাঁদের অংশগ্রহণ, গবেষণামূলক কাজে শিশু ও যুবদের অংশগ্রহণ সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কি ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা যেতে পারে তারই ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে উপরোক্ত কর্মশালার আয়োজন করা হয়। প্রোগ্রামটিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও বাঁশখালী উপজেলার শিশু ও যুব প্লাটফর্ম এর সদস্য ও চুয়েট শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।