থেমে নেই বখাটেদের উত্যক্তকরণ

থেমে নেই বখাটেদের উত্যক্তকরণ

 
জয়নাল আবেদীন সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি
 প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে সীতাকুণ্ডের কোমলতি ছাত্রীরা। তাল-বেতালের অহেতুক গান, বাজে সব শব্দ প্রয়োগ এবং নানান কুরুচিপূর্ণ ভঙ্গিমা বখাটে ছেলেদের প্রধান হাতিয়ার। স্কুলের শুরু আর ছুটির সময় হলেই বখাটের দল সীতাকুণ্ডের বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজ রোড দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। দলবদ্ধ হয়ে নানান কুরুচিপূর্ণ ভঙ্গিমায় আড্ডার ছলে পাশ দিয়ে/সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়া ছাত্রীকে ইঙ্গিত করে নানান বাজে মন্তব্য আর কুরুচিপূর্ণ গান গেয়ে তাদের বিরক্ত করছে।
অনেকেই আবার পরিচিত দোকান বেছে নেয়। সেখানে বসে দোকানে আসা কিংবা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া কোনো ছাত্রী বা সাধারণ মেয়েকে নানানভাবে উত্যক্ত করা তাদের নিয়মিত কাজ। কোনো কোনো মেয়ে তাদের শ্লীলতাহানিরও শিকার হয়েছে। অনিরাপদ স্পর্শ করার মাধ্যমে তাদের বেহায়াপনার প্রকাশ ঘটিয়েছে। আর সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করলে তাকে জামাত-শিবির বা বিএনপির কর্মী বলে হুমকি ও মারধর করে সংঘবদ্ধ এ উত্যক্তকারীরা। অত্যক্তের শিকার মেয়েরাও ঝামেলা সৃষ্টির ভয়ে অনেক ঘটনা তার পরিবার-পরিজনকে জানায় না। তবে কিছু শিক্ষার্থী অন্যায় আর অপমান সইতে না পেরে অভিযোগ দেয়।

সোমবারও (৩ ফেব্রুয়ারি) সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী স্টেশন রোডে বিএসবিএ হাসপাতালের পাশের গলি দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে একাধিক কিশোরীকে উত্যক্ত করতে দেখা গেছে। এই গলিটি একটু নির্জন হওয়ার সুযোগে এখানে ২-৩ টি ছেলে বাইক নিয়ে মেয়েদের গায়ে লাগিয়ে দেয় ও বাজে মন্তব্য করে। কোনো কোনো বখাটে মেয়েদের সাথে থাকা পার্টস, ব্যাগ, চুল ও জামা ধরেও টান দেয়।
সীতাকুণ্ড নুরুল আলম নিউ মার্কেটের সামনে গত পাঁচ মাস আগেও এক নারীকে বখাটেরা উত্যক্ত করে। পরে অভিযোগ জানালে কিছু বখাটেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। জানা গেছে, ঐ নারী কোনো পুলিশ অফিসারের সহধর্মীনি ছিলেন বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংস সময় পুলিশ টাকা নিয়ে বখাটেদের কিছু বকাঝকা করে ছেড়ে দেয়। ফলে বখাটেরা ফিরে এসে অভিযোগকারী বা তার পরিবারকে নানানভাবে হুমকি-ধমকি দেয়।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ‘উপজেলা দুর্ভোগ ও সফলতার সম্ভাবনা’ নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে শিশির আহম্মেদ জানান, সীতাকুণ্ড পৌরসভাধীন ১নং ওয়ার্ডের এয়াকুব নগর ও নির্জন স্থানে যাতায়াতকারী কিশোরীরা প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। এ কারণে মেয়েদের পরিবার সবসময় উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠায় থাকে। তিনি বলেন, চোখের সামনে এসব ঘটলেও প্রতিবাদের ভাষা মানুষ হারিয়ে ফেলছে বখাটেদের বিচারহীনতার কারণে। অহেতুক মানুষ আর কথা বলে ঝামেলায় জড়াতে চান না। যদি প্রশাসন (পুলিশ) সত্যিকার অর্থে সঠিক দায়িত্ব পালন করতো তাহলে মানুষ সাহস পেতো এসব প্রতিরোধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশকিছু অভিভাবক এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা বখাটেদের কারনে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাই। বাধ্য হয়ে সব কাজ ফেলে তাদের সাথে আসি। অনেকে বিদ্যালয়ে একা পাঠালেও উৎকণ্ঠায় থাকেন।
বখাটেপনার শিকার ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রশাসনের সুদৃষ্টি যদি পড়ে তাহলে বখাটেদের উৎপাত কমে আসবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *