কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা গুটিয়ে হাওয়া দুই দম্পতি

কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা গুটিয়ে হাওয়া দুই দম্পতি

দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ইচ্ছাকৃত শোধ না করায় দুই ব্যবসায়ী দম্পতিকে পাঁচ মাসের জন্য জেলে পাঠাতে (দেওয়ানী আটকাদেশসহ) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন অর্থঋণ আদালত।

ওয়ান ব্যংক ও ফিনিক্স ফাইনান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় অর্থঋণ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওয়ান ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন— মেসার্স তোহা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মালিক মো. ওসমান গনি চৌধুরী ও তার স্ত্রী সারা তানভী। অপরদিকে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন মেসার্স ইউসুফ এ্যাপারেলসের মালিক পারভেজ মোহাম্মদ ইউসুফ ও তার স্ত্রী নিশাত সোলতানা।

ওয়ান ব্যাংকের দায়ের করা মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালের আগে ওয়ান ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৮৮ হাজার ৮২২ টাকা ঋণ নেন। ১২ শতাংশ সুদের হারে ব্যাংক আরো ২ কোটি ৭৬ লাখ ৬১ হাজার ৭৯ টাকা পাওনা হয়। ঋণের অর্থ আদায় করতে না পারায় ২০১৫ সালে মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মেসার্স তোহা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও নিলামে বিক্রয়সহ প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করে ব্যাংক। পরে ২০২২ সালের ১৫ জুন প্রতিষ্ঠান মালিক মো. ওসমান গনি চৌধুরী ও তার স্ত্রী সারা তানভীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়ের করেন বিবাদি পক্ষ। পরে শুনানিতে হাইকোর্ট বিভাগ ৩ মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। বিবাদি পক্ষ এই স্থগিতাদেশ পুনরায় বাড়ানোর আদেন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে পাঁচমাসের দেওয়ানি আটকাদেশসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন অর্থঋণ আদালত।

এদিকে ২০০৬ সালে ফিনিক্স ফাইনান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের আগ্রাবাদ শাখা থেকে এক কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার ৭১৮ টাকা ঋণ নেয় মেসার্স ইউসুফ অ্যাপারেলস। পাওনা অর্থ আদায়ে ২০১১ সালে মামলা করে ফিনিক্স ফাইন্যান্স। পরবর্তীতে ২০২১ সালে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা দায়ের করে ব্যাংক। সে মামলার রায়ে ওই প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি বিক্রয়ের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট বিভাগ। কিন্তু কোন কারখানায় স্থাপিত যন্ত্রপাতি খুলে বিক্রি করা যায় না। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠান ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ায় এবং কারখানায় কোন যন্ত্রপাতি না থাকায় হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক যন্ত্রপাতি নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তবে মেসার্স ইউসুফ অ্যাপারেলস ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি এবং দায় পরিশোধে তাদের ইচ্ছা না থাকায় পাঁচ মাসের জন্য দেওয়ানি আটকাদেশসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন অর্থঋণ আদালত।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *