চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শিব চতুদর্শী মেলায় সিড়ি ভেঙে দুজন নিহতের খবরে হুড়োহুড়িতে গুরুতর আহত হয়েছেন পাঁচজন। এছাড়া রাতভর সিড়িতে আটকে থেকে অসুস্থ হয়েছেন একাধিক পুন্যার্থী। শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। পুণ্যার্থীরা সারারাত আটকে থাকার কথা জানালেও মেলা কমিটি বলছে ভিন্ন কথা।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পুণ্যার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুইজন পুণ্যার্থী সিঁড়ি ভেঙ্গে নিচে পড়ে নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে চন্দ্রনাথ ধামে উঠানামার সিঁড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে তীর্থে যাওয়া লাখ লাখ পুণ্যার্থী মাঝপথে পাহাড়ের সিঁড়িতে আটকা পড়েন। সারারাত একই সিড়িতে দাঁড়িয়ে কাটাতে হয় তাদের। অন্যদিকে হুড়োহুড়িতে গুরুতর আহত হনপাঁচজন। এছাড়া সারারাত একই সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া ২ হাজার ২শ জনকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চিকিৎসা দিয়েছে অসুস্থ আরও ৮শ জনকে।
ঢাকা থেকে পুজো করতে আসা মুন্নি ও সুবর্ণা চৌধুরী বলেন, সাত বছর ও ১০ বছরের দুটি বাচ্চা নিয়ে আমরা সারারাত একই সিড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এর আগে আরও তিনবার পূজা করতে এসেছিলাম কখনো এত কষ্ট হয়নি।
চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে আসা নিখিল মন্ডল বলেন, আমরা নারী শিশু বৃদ্ধাসহ ২৫ জনের একটি দল সারারাত পাহাড়ে ওঠার পথে আটকে ছিলাম। এ সময় মেলা কমিটি অথবা স্রাইন কমিটির কোন স্বেচ্ছাসেবককে অনেক খুঁজেও আমরা পাইনি।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুরুদ্দিন রাশেদ বলেন, দুপুর ১টা পর্যন্ত আমরা অসুস্থ ও আহত ২ হাজার ২শত জনকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। তার মধ্যে পাঁচজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে নিহতের ঘটনা সঠিক নয় বলে তিনি জানান।
সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন দাস বলেন, নিহতের ঘটনা সঠিক নয় তবে আতঙ্কে মানুষ হুড়োহুড়ি করায় বেশ কিছু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। উঠা নামার পথ বন্ধ হয়ে পাহাড়ের সিঁড়িতে কয়েক ঘন্টা আটকে থাকার কথা স্বীকারও করেন তিনি
তবে পথ বন্ধ হওয়ার কথা অস্বীকার করে মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, এবারের তিথিতে বন্ধের দিন থাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হয়। ফলে প্রতিবারের মতো এবারও কিছু মানুষ অসুস্থ ও আহত হয়। ওঠানামার সিঁড়ি সরু হওয়াতে এই ঘটনা ঘটে। পথ বন্ধ করা হয়নি বলে দাবি করলেও পাহাড়ে আটকে পড়া পুণ্যার্থীরা সকালে বিকল্প পথ ইকো পার্কের রাস্তা দিয়ে নেমে আসেন বলে জানান তিনি ।