সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সত্ত্বেও বেআইনিভাবে সীতাকুণ্ড পৌরসভা কার্যালয় ও পৌর এলাকার সড়ক বাতির বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাফিজ ইমতিয়াজ এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বদিউল আলম,
এ সময় বাড়বকুণ্ড বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশল নাফিজ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে, সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলমকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সত্ত্বেও বেআইনিভাবে সীতাকুণ্ড পৌরসভা কার্যালয় ও পৌর এলাকার সড়ক বাতির বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে সোমবার পৌরসভা মিলনায়তনে স্থানীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ অভিযোগ তুলেন পৌর মেয়র।
এসময় সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বদিউল আলম বলেন,
সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র অত্র পৌরসভায় প্রায় লক্ষাদিক লোকের বসবাস। অত্র পৌরসভার পৌরবাসী মৌলিক চাহিদার মধ্যে রাত্রিকালীন নিরাপদ চলাচলে সড়ক বাতির চাহিদা অন্যতম। উক্ত চাহিদা শতভাগ পূরণ করতে না পারলেও আপনাদের সকলের সার্বিক সহযোগীতায় সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি, পৌরসভা কোন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয়। জনগণের কল্যাণে, জনগণের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিগত ১৯৯৮ সনে পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত পৌরসভার বিদ্যুৎবিল বকেয়া নেই। অত্র এই পৌরসভার বিদ্যুৎবিল খেলাপী নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, গত ২৬/০৬/২০১৩ ইং দুপুর আনুমানিক ০২ ঘটিকায় আমি দাপ্তরিক কাজে অবস্থানকালীন সময় কর্মচারী মারফত জানতে পারি যে, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল এর জন্য পৌরসভার সকল বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লোক
এসেছে। আমি তাৎক্ষণিক পিয়ন মারফত উনাদেরকে অবহিত করি যে, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। দয়া করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করবেন না। তারা আমার অনুরোধ প্রত্যাখান করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য তৎপর হয়। পিয়ন এসে তাহা আমাকে জানালে আমি আমার দপ্তরের উপস্থিত প্যানেল মেয়র ও ০২ (দুই) জন কাউন্সিলরকে তাদের কাছে পুনরায় প্রেরণ করি। প্যানেল মেয়র শতবার অনুরোধ করা শর্তে ও মোঃ নাফিজ ইমতিয়াজ কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে বৈদ্যুতিক পিলারে উঠা কর্মচারীকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ প্রদান করেন তখন উপস্থিত কাউন্সিলর ও স্থানীয় লোকজন উনাকে পুনরায় অনুরোধ করেন যে, আপনি দয় করে মেয়র সাহেবের সাথে দেখা করেন উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তখন মোঃ নাফিজ ইমতিয়াজ বলেন যে, মেয়র মুক্তিযোদ্ধা এইসব বলে কোন লাভ হবে না মেয়রকে বলেন বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে তার এই উদ্বিত্তপূর্ণ আচরণের উপস্থিত লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠেন। অতঃপর উনারা দুইজন আমার দপ্তরে আসেন। আমি উনাদের উদ্দেশ্যে বলি যে, আমি আপনাদের এত অনুরোধ করেছি, আপনারা আমার অনুরোধ টুকু রাখলেন না! আমরা সকল বিল পরিশোধ করেছি, পলাশ নামে আপনাদের একজন কর্মচারী আমাদের স্টাফসহ ব্যাংকেই ছিল। আপনি প্রয়োজনে উনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। দয়াকরে বিদ্যুৎ লাইনটি সংযোগ দিয়ে দিন। কিন্তু উনি সৃষ্টাচার বহির্ভূত ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়ে আসন ছেড়ে চলে যেতে উদ্বুদ্ধ হন তখনি আমার দপ্তরে উপস্থিত এলাকার লোকজন ও কাউন্সিলর গং উনাকে বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়ে যাইতে বাধা প্রদান করেন। ইতিবসতে উনি উনার উদ্ধাতন কর্মকর্তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন এবং আমাকে কথা বলার জন্য ফোনটি দেন, ফোনে যুক্ত ভদ্রলোক ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা প্রার্থনা করে সংযোগ পুনরায় লাগিয়ে দিবেন মর্মে আশ্বস্ত করেন। হঠাৎ সীতাকুণ্ড থানার একজন পুলিশ অফিসার খুরশিক উপস্থিত হন। সমগ্র বিষয় অবগত হয়ে তিনিও অবিমত করেন যে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা মোঃ নাফিজ ইমতিয়াজ ভুল হয়েছে মর্মে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং লাইনম্যানকে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেওয়ার জন্য মুঠোফোনে নির্দেশ প্রদান করেন বিষয়টি সেখানে হয় শেষ হয়ে যাই ।
পরবর্তীতে মোঃ নাফিজ ইমতিয়াজ সীতাকুণ্ড মডেল থানায় কাউন্সিলর মোঃ ফজলে এলাহী পায়েলকে আসামী করে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় অভিযোগ করে বলে আমরা জানতে পারি এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাথে ও যে, মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে পৌরসভার ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করায় লিপ্ত হয়। আমি এহেন উদ্বিত্বপূর্ণ আচরণে তীব্রঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করছি এবং আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাচ্ছি যে, বিদ্যুৎ বিভাগের নানা অপকর্ম ও অনিয়মের কারণে সরকারের সুনাম নষ্ট করার দায়ী কারা তা বের করতে ঐসব ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে সরকারে তথা বিদ্যুৎ বিভাগের ভাবমুর্তি পুনঃরোদ্ধার করা এবং মোঃ নাফিজ ইমতিয়াজ ও তার পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস নির্ণয় করে কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এই দুষ্টু প্রকৃিতির লোক তাৎপর্য তা বের করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান করছি। লোকমুখে তার অনৈতিক ও অনিয়মের অনেক কাহিনী চলমান। আমরা পৌরবাসী নিয়ে এই প্রকৌশলীর অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক,রাজনৈতিক ভাবে প্রতিরোধ করব,
একইসঙ্গে পৌর বাসিন্দাদের নিয়ে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
পৌর কাউন্সিলরদের অভিযোগ, প্রকৌশলী নাফিজ ইমতিয়াজ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সরকার বিরোধী একটি চক্রের হয়ে কাজ করছেন তিনি। আযানের আগমুহূর্তে, সেহরির সময়, ইফতারের সময় বিদ্যুৎ বন্ধ করে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার পিছনে তার হাত রয়েছে। যেকোন ছুঁতোয় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পরবর্তীতে লাইনম্যানকে দিয়ে টাকার বিনিময়ে পুণঃসংযোগ দেওয়ার অভিযোগও তুলেন তারা।