জানি কিন্তু মানি না!

আদ্বান অর্চিশ, সীতাকুন্ড বার্তা;

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এখন রাস্তাঘাটে সকলের মুখে মাক্স। সুরক্ষিত থাকতে এখন অনেকে ব্যবহার করছেন গ্লাভসও। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন শুধু এতটুকুতেই নিজেকে নিরাপদ ভাবার কোন কারণ নেই। কারণ নোভেল করোনা ভাইরাস যে শুধু নাক ও মুখ দিয়ে ঢুকতে পারে এমনটা একেবারেই নয়। হংকংয়ের একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, চোখ দিয়েও ঢুকতে পারেন নোভেল করোনাভাইরাস এবং এই ভাইরাসের চোখ দিয়ে মানব শরীরে ঢোকার ক্ষমতা রয়েছে ভীষণভাবে। ল্যাপেট রেসপিরেটরি মেডিসিন নামক পত্রিকায় প্রকাশিত ইউনিভার্সিটি অফ হংকংয়ের গবেষকদের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রতি তারা কয়েকজন করোনা আক্রান্তের চোখ এবং শ্বাসনালী থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন তারপর ২০০৩ সালের আতঙ্ক তৈরি করা সার্স ভাইরাসের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের তুলনা করেন।

ইউনিভারর্সিটি অফ হংকং এর দাবী সেই তুলনামূলক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সার্সের থেকে করোনার চোখ দিয়ে ঢোকার ক্ষমতা ৮০ থেকে ১০০ গুন বেশি। গবেষক দলের প্রধান মাইকেল চেন চি ওয়াই এর দাবি সম্ভবত এই কারণেই সার্সের তুলনায় দ্রুতগতিতে ছড়িয়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। চোখ দিয়ে ঢুকে অনেকের শরীরে বাসা বেঁধেছে এ ভাইরাস।

চিকিৎসকদের একাংশের মতে,মুখের লালা রসের মত চোখ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হতে পারে। চোখ দিয়ে যে করোনা ভাইরাস মানব শরীরে ঢুকে পড়তে পারে চিকিৎসকদের মনে সে সন্দেহ প্রথম তৈরি হয় চীনের একটি ঘটনায়। করোনাভাইরাস এর প্রধান কেন্দ্রবিন্দু চীনের উহান থেকে বেজিংয়ে আসেন এক ফুসফুসের চিকিৎসক। বেইজিংয়ের পৌঁছানোর ঘন্টা তিনেকের মধ্যে তার চোখ লাল হয়ে যায়। তারসাথে জ্বর আসে এবং সেই সাথে চোখের সমস্যা ও বাড়ে। এরপর নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে প্রথম উপসর্গ ছিল চোখ লাল হওয়া। বিশেষজ্ঞদের অনুমান ছিল এক্ষেত্রে চোখ দিয়ে চিকিৎসকের শরীরের ঢুকেছিল করোনা। চোখের জলে কেভিট-১৯ তিন সপ্তাহ ধরে থাকতে পারে। এ খবর শুনে অনেকেই শুরু করে চশমা বা গগলস পড়া। কিন্তু মাক্সের তুলনায় গগলস বা চশমা পরিহিতদের হার অনেকটাই কম। চোখের ব্যাপারে বেশিরভাগ মানুষই উদাসীন।

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ মাক্স পড়লেও হু হু করে বেড়ে চলছে আক্রান্ত হওয়ার হার। তাহলে প্রশ্ন মাক্স পরা সত্বেও কেন নতুন করে এত আক্রান্ত হচ্ছে? সন্দেহের তীর এখন মুখ ও নাক ছাড়াও শরীরের আরেক বড় প্রবেশদ্বার চোখের দিকে। আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি, কাশি বা কথা বলার সময় ড্রপলেটস্ বা ফোটা উড়ে যে অন্যের চোখে পড়তে পারে এবং তার থেকে সুস্থ ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারে তা অনেকেই জানে কিন্তু গগলস বা চশমা পড়া কিছুতেই যেন অভ্যাসে পরিণত করা যাচ্ছেনা। ফলে বেড়ে যাচ্ছে আক্রান্তের হার। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সময় থাকতে চোখ-কে নাক ও মুখের মত সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top