এ যেনো মিনি কক্সবাজার

এ  যেনো মিনি কক্সবাজার

সীতাকুণ্ড বার্তা প্রতিনিধি

প্রকৃতির অভয়ারণ্যরণ্য সীতাকুণ্ডের পুরো অঞ্চল। যেখানেই দৃষ্টি যাবে সেখানেই প্রকৃতির বৈচিত্রে আপনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠবেন। আপনার মনের অবস্থা প্রকৃতির সৌন্দর্য্যে পরিবর্তন হতে বাধ্য। একাকী বা পরিবার নিয়ে আসলেও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে তার পরম আত্মীয় করে নিবে। তাই প্রকৃতির মায়ার টানে আপনি সীতাকুণ্ডে ফিরে আসবেন বার বার। দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক উত্তর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসেন। অন্যান্য ক্ষেত্রে এই উপজেলার অবদান যেমন রয়েছে, পর্যটন শিল্পেও সীতাকুণ্ডের বিরাট অবদান রয়েছে। দেশের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হচ্ছে কক্সবাজার। যারা একবার কক্সবাজার গিয়েছে তারা পুনরায় সাগরের বুকের উত্তাল দেখতে চলে যান।

কিন্তু সবার আর্থিক অবস্থা এক নয়, আবার কেউ মিতব্যয়ী। সেই খরচ আর ক্লান্তির কথা বিবেচনা করে অনেকে বিকল্প পথ খোঁজেন। তাই বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের পরিবর্তে তারা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের সমুদ্র সৈকত উপজেলার গুলিয়াখালীকে বেছে নেন। সেই জোয়ার ভাটা, হরিণের উঁকিঝুকি, হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার সুর, হরেক রকমের খাবার, নৌকা বা বোট দিয়ে ঘুরে বেড়ানো- সবই পাবেন এই সৈকত পয়েন্টে। বিভিন্ন ধরণের গাছ; যেমন- কেওড়া, ঝাউ, ক্যামেরা গাছ, পাতা গাছসহ আরো অনেক প্রকারের গাছ রয়েছে এখানে। গাছের ডালে ডালে বসে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আপনাকে সুরের ভুবনে নিয়ে যাবে। পাখির কলরবে আর সমুদ্রের কলতানে মূখরিত হয়ে ওঠে গুলিয়াখালী সৈকত পয়েন্ট। এ যেনো বাংলার মানচিত্রে মিনি কক্সবাজার।
সৈকতের কাছাকাছি দূরত্বে রয়েছে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর লোকদের দোকান। বিশেষ করে মামুন স্টোরের ফুসকা খেলে মনে হবে ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি খাবার খাচ্ছেন। মফিজ স্টোর আপনার ক্লান্তি-অবসাদ দূর করে দিবে রং চায়ের জাদুতে। সবুজ ঘাসের আবরণ ও ছোট ছোট জলভর্তি গর্ত দেখলে মনে হবে যেনো কোনো মৃৎশিল্পের হাতে গড়া। একঘেয়েমি দূর ও নিজেকে চাঙ্গা করতে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত হতে পারে কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকতের বিকল্প। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে বিশাল এই বীচের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে আপনার মনের পরিধিকে। বাংলাদেশের ছয় ঋতুতেও সমুদ্র সৈকত বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। সূর্যের কিরণ যখন সমুদ্রের উপকূলে আলো ছড়ায় তখন মুগ্ধ হন পর্যটকেরা। সমুদ্র সৈকতে দর্শণার্থীদের ভিড় পুরো পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

ঢাকা-চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার নামার বাজার থেকে ৩০ টাকায় সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে ১৫ মিনিটে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে পারবেন যে কোনো পর্যটক। নিজের অশান্ত মনকে মুহূর্তে শান্তির বার্তা পাঠাতে পারবেন নাতিশীতোষ্ণ হিমেল হাওয়ায়। ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিস, ভলিবল, খেলার জন্য বিশাল মাঠ- সবই পাবেন এখানে। আপনার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে রয়েছে বীচ কমিটি। একাধিকবার আসা এমন কয়েকজন দর্শণার্থী দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, মিনি পার্ক চিড়িয়াখানা ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করলে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত দ্বিতীয় কক্সবাজার হতে পারে। এই সৈকত পয়েন্টটি মিনি কক্সবাজার হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।
বীচ কমিটির মফিজুর রহমান বলেন, সরকার যদি এই সমুদ্র সৈকতের দিকে সু দৃষ্টি দেয় তাহলে অচিরেই বিশ্বের বুকে সীতাকুণ্ডের এই গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top