সীতাকুণ্ডে আইআইইউসি ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

সীতাকুণ্ডে আইআইইউসি ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ।

মোঃ জয়নাল আবেদীন , সীতাকুণ্ড চট্টগ্রাম।

  1. চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরায় প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরণের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার ড. আব্দুল হামিদ চৌধুরী ও সাইন্স ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর ড দেলোয়ার হোসেন, সাইন্স ফ্যাকাল্টির ডিন রিয়াজ মাহমুদ, প্রক্টর মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, প্রফেসর আব্দুল হক প্রমুখ।

এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর কে এম গোলাম মহিউদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক দলের সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ জানিয়ে প্রফেসর গোলাম মহিউদ্দিন আরো বলেন, ১৯৯৫ সালে শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশের কথা চিন্তা করে সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় পাহাড়ের কিনারে নিরিবিলি পরিবেশে যাত্রা শুরু করে আইআইইউসি। সেই থেকে আইআইইউসি সুনামের সহিত শিক্ষার অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখে আসছে। প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে ২০০ জন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নাইজেরিয়া, কোরিয়া, চীন, আফ্রিকাসহ এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন, শরিয়া, কুরআনিক সায়েন্স, হাদিস, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ইংরেজি, বিবিএ, ইসলামের ইতিহাস, সমাজকর্ম, ফার্মেসী, আধুনিক ভাষা বিজ্ঞানসহ মোট ৩০ টিরও অধিক বিভাগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েটদের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন ৩৫০ জন শিক্ষকসহ প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষক আছেন। এর মধ্যে ১০১ জন পিএইচডি ডিগ্রীধারী। তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, বিগত ২৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটি কখনোই সেশনজটের শিকার হয়নি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে গত ২৭ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উসমান (রা.) হলের কুরআনিক সায়েন্সের আদনান নামে এক সাধারণ শিক্ষার্থীকে শিবির কর্মী সন্দেহে মারধর করেন ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন ছাত্র। পরে আহত অবস্থায় শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরদিন এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে। অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। অরাজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৯ জানুয়ারি এক জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহবান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সভার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ এবং শ্রেণি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করলেও ক্যাম্পাসে উত্তেজনা কমানো যায়নি। বন্ধ ঘোষণার পরও ক্যাম্পাসে কয়েকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও শো-ডাউনের ঘটনা ঘটেছে। এমতাবস্থায় ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ করার সিদ্বান্তে পৌঁছায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ- জানান প্রফেসর কে এম গোলাম মহিউদ্দিন।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *