সীতাকুণ্ড বার্তা;

করোনাকালীন ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত হয় গণপরিবহন চালুর। সঙ্গে ছিল স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা।

কিন্তু মাসখানেক অতিবাহিত হতে না হতেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে উল্টো শতভাগ ভাড়াও বাড়ানো হয়। যাত্রীদের ক্রমাগত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়ায় ফিরচে গণপরিবহন। এতে খুশি যাত্রীরা।

যাত্রীরা বলছেন, বাড়তি ভাড়া যাত্রীদের জন্য বোঝা ছিল। ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও শতভাগ যাত্রী নিয়ে বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এটা যাত্রীর জন্য অতিরিক্ত চাপ ছিল। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় গত ২৪ মার্চ গণপরিবহনসহ দূরপাল্লার বাসগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই মাস পর ১ জুন থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে সীমিত পরিসরে ভাড়া বাড়ানো হয়। সেই সময় মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান ভাড়ার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর অনুমোদন দেয় সরকার। বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হলেও ৫০ শতাংশ যাত্রী নেওয়ার যে শর্ত ছিল, তা মানছিলেন না পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

ফলে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে গত বুধবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাসে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়া নিতে নির্দেশনা জারি করে।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন গণপরিবহনে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করা আরো আগেই প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন তারা। যেহেতু ৫০ শতাংশ আসনে যাত্রী নেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা ছিল সেটা গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না, তাই এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার যৌক্তিক।

রাজধানী পরিবহনের যাত্রী সুমন রহমান বলেন, এ সিদ্ধান্তে নিম্ন আয়ের মানুষ খুবই উপকৃত হয়েছে। বর্ধিত ভাড়া তাদের ওপর বোঝা ছিল। আমাদের আয় বাড়েনি, কিন্তু ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। ফলে আমাদের খরচ বেড়েছে। তাই আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি ছিল। আগের ভাড়া বহালের সিদ্ধান্তে আমরা উপকৃত হয়েছি।

অনাবিল পরিবহনের যাত্রী তাসফিয়াহ হক বলেন, আমরা যারা কর্মজীবী, বর্ধিত ভাড়া আমাদের জন্য বোঝা, তার কারণ হচ্ছে, করোনায় আমাদের বেতন কিন্তু বাড়েনি, বরং কমানো হয়েছে। কিন্তু কোন যুক্তিতে সরকার ভাড়া বাড়িয়েছিল, সেটা আমার বুঝে আসে না। পৃথিবীর কোনো দেশেই করোনাকালে এমন ভাড়া বাড়ানো হয়নি। যাই হোক, এই বোঝা প্রত্যাহার করা হয়েছে, এজন্য আমরা খুশি।

প্রচেষ্টা পরিবহনের যাত্রী কানিজ শান্তা বলেন, করোনায় সব সেক্টরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের আয় কমেছে। কিন্তু বর্ধিত ভাড়া বাড়ানোয় মনে হয়েছে শুধু পরিবহন সেক্টর ক্ষতির মুখে পড়েছে, আর সাধারণ মানুষের আয় বেড়েছে। এটা একটা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল। যাই হোক, সেটা দেরিতে হলেও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

দেওয়ান পরিবহনের সহকারী লিটন সরকার বলেন, মালিক সমিতি ইতোমধ্যে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়া নেওয়া হবে।

আইপি পরিবহনের সহকারী সিয়াম বলেন, আমরা মালিক সমিতি থেকে যে নির্দেশনা পাবো, সেই অনুযায়ী ভাড়া আদায় করবো। এর বাইরে যাওয়ার কোনো এখতিয়ার আমাদের নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top