সীতাকুন্ডে অন্ধকারে আলো’র প্রদীপ জ্বালালেন জিপিএ ৫ অর্জনকারী সজল দাসঃসোলার প্যানেল দেয়ার ঘোষণা আলহাজ্ব দিদারুল আলম এমপি’র

সীতাকুন্ড বার্তা

উত্তর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড অবস্থিত সি.সি.সি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্র এবার এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে।ঘরে নেই বিদ্যুৎ তবুও সজল দাস নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের আত্ববিশ্বাস নিয়ে এই সফলতা অর্জন করেন।

মেধাবী ছাত্র সজল চন্দ্র দাস তার ভাল ফলাফল করার জন্য তার প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকার নিকট কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।

জিপিএ ৫ পাওয়া সজল দাসের সাফল্যে সকল শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে তার অসুস্থ পিতা সন্তোষ চন্দ্র দাস ও মাতা নন্দ রাণী দাস। তার বাড়ি শুকলাল হাট (কলমিলতা ক্লাবের দক্ষিণ পাশ্বে), বাড়বকুন্ড,সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম।

তার এ অর্জনে আনন্দিত স্কুলের সহপাটি, পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। সে সবার আর্শিবাদ কামনা করেছে। সে অাগামীতেও যেন এমন সাফল্য বয়ে অানতে পারে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সনজিব কুমার দে জানান; সজল চন্দ্র দাস আমাদের স্কুলের মেধাবী একজন ছাত্র, সে ইতিপুর্বে
পিএসসিতে পরীক্ষায় ৪.৭৩ এবং জেএসসিতে জিপিও ৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল।
গত ০৮/০৮/২০১৮ইং তারিখে আমি তার বাড়ীতে দেখতে গিয়েছিলাম কি ভাবে সে লেখাপড়া করে সেটি দেখতে, বাড়ীত নয় যেন একটি ঝুপড়ি ছাউনি, আছে শুধু চারিদিকে প্লাস্টিক ঘেরা। খুবই নাজুক অবস্থা ঘরের। নিজের কোন জায়গা জমি নেই বার্ষিক খাজনা দিয়ে ভাড়া থাকে। তাদের ঘরে নেই কোন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। অামি তাকে জিজ্ঞেস করলাম কি ভাবে চলে লেখাপড়া,তখন সে বললো; বেশীর ভাগ সময় দিনের বেলায় পড়ালেখা শেষ করি, কারণ অনেক সময় কেরোসিন কেনার মত টাকা থাকেনা। তার বাবা খুব অসুস্থ, মা ধান খোলায় কাজ করেন মায়ের আয় দিয়ে এবং প্যাসিফিক ফাউন্ডেশন এর সার্বিক সহায়তায় তার এবং চার ভাই বোনের লেখাপড়া চলে। দুই বোন আর সে পড়ে সিসিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে ও এক ভাই পড়ে ডিডিটি প্রাইমারীতে।

তার বিষয়ে কথা বললাম পাশের বাড়ীর এক দিদির সাথে, যার ঘরে বিদ্যুৎ আছে অর্থাৎ সজলের ঘরে একটি বিদ্যুৎ লাইট দেওয়া যায় কিনা তিনি আশ্বাস দিলেন স্বামীর সাথে কথা বলবেন, আমাকেও বললেন আপনি ও একটু বলবেন। রাত্রে ১০ টায় উনার সাথে কথা বললাম মনে হল উনার উত্তরে সম্ভব নয়। আমি নিজে ও শিক্ষক মণ্ডলী, পরিচালনা পরিষদ খাতা কলম স্কুল ড্রেস কিছু কিছু সাহায্য করে আসছি কিন্তু তার বাড়ীতে গিয়ে দেখলাম এই সাহায্য তার জন্য কিছুনা।এই ভাবে মানুষ জীবন যাপন করে অদম্য সাহস নিয়ে তার মা যে তাদের কে লেখা পড়া করাচ্ছেন আমি ভাবতে পারছি না। তাই আমি তাকে সাহস দিলাম এবং সাহস দিলো আমার আরেক সহকর্মী অরুণ কান্তি দাস; সজল তোকেই এক দিন বড় মানুষ হতে হবে আর এই বড় মানুষ হতে হলে তোর একমাত্র অবলম্বন ভালো লেখা পড়া। এই ছাড়া আর কোন উপায় নেই তোর এই সংসারের সবার মুখে হাঁসি দেখার। সবাই দোয়া /আর্শিবাদ করবেন এই ছাত্রের এবং এই পরিবারটির জন্য।

এদিকে সি.সি.সি উচ্চ বিদ্যালয়ের জিপিএ ৫ পাওয়া মেধাবী ছাত্র সজল চন্দ্র দাসের ঘরে বিদ্যুুৎ নেই জানতে পেরে আগামী ২/১দিনের মধ্যে তার ঘরে ১টি সোলার প্যানেল (সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা) করে দেবেন বলে জানিয়েছেন আলহাজ্ব দিদারুল আলম এম.পি।
স্থানীয় সাংসদের এ উদ্যেগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সীতাকুণ্ডের সর্বস্থরের জনসাধারন। এমপির এমন ঘোষনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়েছে। মহানুভবতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে অনেকে।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *