সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে নিহত ৩, আহত দেড় শতাধিক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত ও দগ্ধ দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত।

শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। 

রাসায়নিক দ্রব্য বিস্ফোরণের কারণে বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে কন্টেইনার, আগুনের তীব্রতায় কাছে ঘেঁষতে পারছে না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ১০০ গজ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে চলেছে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ডিপোতে প্রায় দেড়শো কন্টেইনার আছে। কিন্তু রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে কন্টেইনার। যে কারণে আগুনের কাছেও ঘেঁষতে পারছি না আমরা। প্রায় ১০০ গজ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’

আহত ও নিহতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অজ্ঞাত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্যাসের তীব্রতায় আমাদের প্রায় ৮ জন ফায়ার ফাইটার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে; কিন্তু এখন কার কী অবস্থায় বা কোন পরিস্থিতিতে আছে তা বলতে পারছি না। পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। সেইসঙ্গে আশপাশের বাসা বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া গেছে। 

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের কনস্টেবল তুহিনের পা বিচ্ছিন্নসহ আরও অন্তত পাঁচ কনস্টেবল, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন এবং শিল্প পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্যও আহত হয়েছেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। বিস্ফোরণে অনেক মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহত আছে কিনা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও সময় লাগবে।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসে সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী চট্টগ্রামের সব চিকিৎসককে চমেক হাসপাতালে এসে রোগীর চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তাছাড়া মুমূর্ষুরোগীদের আনতে সীতাকুণ্ডের ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে অনুরোধ করেছে ফায়ার সার্ভিস। আর রক্তদাতাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *