শেষ হলো সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে উদ্ধার অভিযান, নিখোঁজ নেই কেউ

শেষ হলো সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে উদ্ধার অভিযান, নিখোঁজ নেই কেউ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। 

রবিবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা দেন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক।

আগ্রাবাদ কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় রবিবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। তবে অভিযানে হতাহত কাউকে উদ্ধারের খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে বিকেল ৪টার দিকে দ্বিতীয় দিন এবং দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

কন্টোল রুম থেকে আরও জানায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন নির্বাপণ হয়ে যাওয়ার পরও আগ্রাবাদ ও কুমিরা স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছিল। এখন আর দুর্ঘটনা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি ও এবং কারণ তদন্ত সাপেক্ষে পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা।

এর আগে, শনিবার (৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের সঙ্গে নৌবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয়। প্রথম দিনের উদ্ধার অভিযান শেষে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনের কথা জানা যায়। এরমধ্যে আহত ২৪ জন এবং নিহত ৬ জন। নিহতদের মধ্যে পরিচয় মিলেছে ৫ জনের। তাদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। আহত ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এবং ৪ জন সীতাকুণ্ডের বিএসবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন হলেন— মো. শামসুল আলম (৫৬), মো. ফরিদ (৩৬), রতন নখরেট (৪৫), আব্দুল কাদের (৫০) এবং সালাউদ্দিন। বাকি একজনের নাম জানা যায়নি।

এছাড়া আহত ২৪ জনের মধ্যে পরিচয় মিলেছে ১৯ জনের। তারা হলেন— মো. ফোরকান (৩৩), মো. নুর হোসেন (৩০), আ. মোতালেব (৫২), মো. আরাফাত (২২), মাকসুদুল আলম (৬০), মো. ওসমান (৪৫), মো. সোলায়মান (৪০), মো. রিপন (৪০), মো. আজাদ (২২), রিপন (৬০), নারায়ন ধর (৬৪), মো. জসিম (৫০), ফেন্সী (২৬), মো. জাহেদ (৩০), মুবিবুল হক (৪৫), রোজি বেগম (২০), মাহিন শাহরিয়ার (২৬) এবং নওশাদ সেলিম (৭০)।

এদিকে, বিস্ফোরণের কারণ জানতে জেলা প্রশাসনের সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে। কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধিকে।

অন্যদিকে, বিস্ফোরণে আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে সাড়ে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে এবং নিহতের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নিহতের পরিবারকে আরও ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *