দোকানিরা আজ তীর্থের কাক সীতাকুণ্ডে!

সীতাকুন্ড বার্তা;

সারা বিশ্বে অর্থনীতির উপর করোনার প্রত্যক্ষ চোখ রাঙ্গানীতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। কাজ হারিয়ে অনেক মানুষ আজ বেকার। আয় নেই, তাই ক্রয় ক্ষমতাও কমছে। ফলে ব্যবসা বাণিজ্যে পড়েছে ভাটা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলছে শ্রমিক কর্মচারী ছাঁটাই।

সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। উদীয়মান অর্থনীতির দেশটিও আজ বিপর্যস্ত।

চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড একটি কর্মচঞ্চল ব্যবসায়িক উপশহর। সীতাকুন্ড সদরে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়িক লেনদেন সম্পন্ন হতো। লেগে থাকতো ভীড় বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ফুটপাথের খুচরো বিক্রেতার দোকান পর্যন্ত। এমন দৃশ্য যেন এখন রুপকথায় পরিণত হয়েছে।

গত ১৯ মে সীতাকুন্ড নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় সাক্ষরিত উপজেলা নির্বাহী অফিসের “করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে মার্কেট বন্ধে”র এক আদেশের পরপর উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টায় রাস্তায় চলাচলকারী ও মার্কেটে শপিং করতে আসা মানুষজনকে সচেতন করতে সক্ষম হয়। ঈদের আগে মানুষ যে ধরনের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকতো মার্কেট বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়ে। এরই মধ্যে সীতাকুন্ড পড়ে যায় রেড জোনে। প্রতিদিন বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। তাতে সাধারণ মানুষের মনে আরও শংকা বেড়ে যায়। ফলে আস্তে আস্তে দোকান ও মার্কেট খুললেও দেখা মিলছে না ক্রেতার।

মের্সাস বাংলাদেশ স্টোর এর স্বত্বাধিকারী  কামাল উল্লাহ সীতাকুন্ড বার্তার সাথে আলাপকালে জানান, আগে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকানে যেসব মহিলা ক্রেতাদের  ভীড় ছিলো, তা আর নেই। তবে তাও আমরা খুশি উনারা করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে  সচেতন হয়েছেন।

সীতাকুন্ড বাজারের আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী জানান, আগে যেখানে প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকা লেনদেন হতো এখন তা ১ কোটির নিচে নেমে এসেছে ।

সীতাকুন্ড কলেজ রোড সংলগ্ন মার্সি লাইব্রেরির সত্ত্বাধিকারী মো: রেজাউল করিম জানান, স্কুল কলেজ বন্ধ থাকাতে আমাদের বেচা-বিক্রি প্রায় শূন্যের কোটায়। দোকান না খুললে বইপত্র সহ ইত্যাদি সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাবে, তাই দোকান খুলতে হয়। কর্মচারীর বেতন দিয়ে বর্তমানে দোকান চালানো দুস্কর।

সীতাকুন্ড সদরের হাতেগুনা কিছু দোকান ছাড়া বাকি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান গুলোর অবস্থা শোচনীয়। সেলুন ও বিউটি পার্লারে মানুষ প্রায় যাচ্ছেন না বলেই চলে। বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে দশ ভাগের এক ভাগও বেচা বিক্রি নেই। অনেকে তাদের দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে আরো অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যাবে বলে অনেক দোকানিরা  শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *