কোকেন চোরাচালান মামলায় ১০ আসামির বিচার শুরু

২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সূর্যমুখী তেলের আড়ালে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা চোরাচালান মামলায় ১০ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়া এ বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ২ মার্চ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।

যাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত তারা হলেন— আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের মালিক নূর মোহাম্মদ, কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপাক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) একেএম আজাদ রহমান, সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই খান জাহান আলী লিমিটেডের পরিচালক মোস্তাক আহমদ খান এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।

তাদের মধ্যে কারাগারে আছেন গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও আতিকুর রহমান। জামিনে রয়েছেন একেএম আজাদ রহমান ও সাইফুল ইসলাম। এছাড়া এই মামলায় পলাতক রয়েছেন নূর মোহাম্মদ, মো. মেহেদী আলম, মোস্তাক আহমদ খান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।

চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আসামিদের পক্ষে অব্যাহতির আবেদন করা হলেও তা না মঞ্জুর করে আদালত ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫/বি ও ২৫/ডি ধারায় অভিযোগ গঠন করেছে। আগামী ২ মার্চ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণেরে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।’

ইন্টারপুলের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের কাছ থেকে বার্তা পেয়ে ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ওই বছরের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে। পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় ২৭ জুন চট্টগ্রামের বন্দর থানায় নূর মোহাম্মদ ও গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ। পরে আদালত চোরাচালানের ধারা সংযোজনের নির্দেশ দেয়।

২০১৫ সালে তরল কোকেন উদ্ধারের ওই ঘটনায় বন্দর থানায় মাদক ও চোরাচালানের দুটি মামলা হয়েছিল। দুই মামলাতেই দশজনকে আসামি করা হয়েছিল। চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পর অধিকতর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাওয়ার পর এবার চোরাচালান আইনের মামলায় চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *