সীতাকুণ্ড বার্তা প্রতিবেদক
২০ রোজার মধ্যে সব শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের নির্দেশনা দিয়েছে বিজিএমইএ। এছাড়া শ্রমিকদের ধাপে ধাপে ঈদের ছুটি দিয়ে নিরাপদযাত্রা নিশ্চিতের পরামর্শ দিয়েছে ব্যবসায়ীদের এ অভিভাবক সংগঠন। সোমবার বিজিএমইর সভাপতি ফারুক হাসান সাক্ষরিত এক চিঠিতে কারখানা মালিকদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে ১ হাজার ৪৭০টি পোশাক কারখানা রয়েছে। বড় বড় কারখানার পাশাপাশি এ তালিকায় রয়েছে মাঝারি, ক্ষুদ্র ও চুক্তিভিত্তিক (সাব-কন্ট্রাক্ট) প্রতিষ্ঠানের নাম। এরমধ্যে চট্টগ্রামে বিজিএমইএর তালিকাভুক্ত ৯১টি, বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ১৪০টি কারখানা রয়েছে।
গতবছর সরকারি ও বিজিএমইএর নির্দেশনা মেনে ২৮ এপ্রিলের মধ্যে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৪৬৬ পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করে দেয়। বাকি ৪ কারখানায় ১০ থেকে ১২ জন করে শ্রমিক কাজ করতো। তারা ঈদের আগের রাতে অর্থ শোধ করে। এবছরও ঈদের আগে শতভাগ কারখানা শ্রমিককের বেতন-বোনাস শোধ করা হবে বলে মনে করছেন বিজিএমইএ নেতারা।
বিজিএমইএর প্রথম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, যথাসময়ে শ্রমিক কর্মচারিদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতেই হবে। এটা আমরা কড়াকড়িভাবে মনিটরিং করছি। যদিও এখন আমাদের অধিকাংশ কারখানাতে আর্থিক সংকট চলছে। যেহেতু অর্ডার কমে গেছে। বায়াররা (বিদেশি ক্রেতা) দেরিতে অর্থ শোধ করছেন। সব মিলিয়ে বর্তমানে পোশাক কারখানাগুলো চাপে সময় পার করছে। যেহেতু এখন ঈদের সময়, তাই ২০ রোজার মধ্যে যেন কারখানা মালিকরা বেতন-বোনাস শোধ করে দেয় সেটা আমরা বিজিএমএইর পক্ষ থেকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রোজার ঈদে চট্টগ্রামের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যাতে নিরাপদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া আসা করতে পারে সে লক্ষ্যে ছয় নির্দেশনা দিয়েছে বিজিএমইএ।
বিজিএমইএর ছয় নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-
► ঈদের ছুটিতে সড়ক, রেল ও লঞ্চ যাত্রায় অতিরিক্ত শ্রমিকের চাপ কমাতে কারখানা মালিকদের ধাপে ধাপে শ্রমিকদের ছুটি দিতে হবে।
► প্রতিটি কারখানা নিজস্ব শিপমেন্ট, কার্যাদেশ ও প্রোডাকশনের সাথে সমন্বয় করে ঈদের ২ থেকে ৩ দিন আগে শ্রমিকদের ছুটি দেয়ার অনুরোধ করা হলো।
► কারখানা কর্তৃপক্ষ চাইলে সরকারী বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে জেনারেল ডিউটি করিয়ে সমন্বয় করতে পারবেন।
► ঈদের আগে শষ কর্মদিবসে মাল বোঝাই করা ট্রাকে যাতায়াত না করা, অতিরিক্ত যাত্রী না হওয়া, তাড়াহুড়া করে রাস্তা পারাপার না করা, রাস্তার ফুটপাত ধরে হাঁটা, অপরিচিত লোকের কাছ থেকে কিছু না খাওয়া ইত্যাদি বিষয় শ্রমিকদের জানানোর অনুরোধ করা যাচ্ছে।
► শেষ কর্মদিবসে শ্রমিকদের গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার লক্ষ্যে প্রয়োজনে কারখানা কর্তৃপক্ষ ৮ থেকে ১০ জনের টিম গঠন করে (ইউনিফর্ম ও আইডি কার্ড প্রদর্শন করে) স্থানীয় ট্রাফিক বিভাগকে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
► গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট মোতাবেক তৃতীয় কোন পক্ষ শ্রম অসন্তোষ হবার মত ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে। তাই শ্রমিক অসন্তোষ হতে পারে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, কলকারখানা অধিদপ্তর ও বিজিএমইএর সাথে আলোচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।