সীতাকুণ্ড বার্তা;
গতকাল পালিত হলো শুভ বিজয়া দশমী। অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সোমবার (২৬গ অক্টোবর) শেষ হলো বাঙালি সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব – দুর্গাপূজা।
দেবী এবার এসেছিলেন দোলায় চড়ে, গেলেন গজে চড়ে। মণ্ডপে মণ্ডপে তাই ছিলো বিদায়ের সুর, বিসর্জনের ব্যথা।
নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে শুধু ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। জনসমাগমের কারণে স্বাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়।
তাই গতকাল সকালেই সীতাকুন্ড পূজা উদযাপন কমিটি ও পৌরসভা পূজা উদযাপন কমিটি যৌথভাবে এক সভায় বাবু হারাধন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যান্য বছরের মতো এবার সকল প্রতিমার শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সীতাকুণ্ডে পৌরসভা পূজা উদযাপন কমিটির তত্ত্বাবধানে নবজাগরণ সনাতন সংঘের উদ্যোগে সরকারি বিধি নিষেধ মান্য করে ডি.টি রোডে শুধুমাত্র ৭ টি প্রতিমার প্রদক্ষিণ সম্পন্ন হয়।
বিজয়া দশমীর দিন সংক্ষিপ্ত পূজার পর দর্পণ বিসর্জন হয়। পুরাণ মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত যুদ্ধের পর দশম দিনে জয়ী হন দেবী দুর্গা। এজন্যই বিজয়া। সেই লোকাচার বাংলার ঘরে ঘরে সিঁদুর খেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি চলে কোলাকুলিও। তবে করোনা মহামারির কারনে এবার কোলাকুলি হয়নি।
এর আগে ২২ অক্টোবর চন্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুরু হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। যদিও বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ এড়াতে এবছর ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়।
এর আগে বেশ কিছু বিধি নিষেধও প্রদান করা হয়। মন্ডপে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি সীমিত করা ও সন্ধ্যায় আরতির পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় পূজামন্ডপ । ছিল না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে সোমবার (২৬ অক্টোবর) সরকারি ছুটির দিন। পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী প্রদান করেছেন। বিজয়া উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। এছাড়া জাতীয় দৈনিকগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করে।
সীতাকুণ্ড পূজা উদযাপন পরিষদ ও পৌরসভা উদযাপন পরিষদ পক্ষ থেকে বিজয়া দশমী উপলক্ষে দেশের সকল মানুষকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে ও সুষ্ঠুভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।