সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৭৫ পরিবারকে উচ্ছেদে আবুল খায়ের গ্রুপ ও দুর্বৃত্তদের তৎপরতা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
ভূমি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ১৮ বিবাদীকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ত্রিপুরাপাড়ায় বসবাসরত এসব পরিবারকে উচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিটে এ আদেশ হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৭৫ পরিবারকে উচ্ছেদে আবুল খায়ের গ্রুপ এবং অন্যান্য দুর্বৃত্তদের তৎপরতা বন্ধে ও উচ্ছেদকারী দৃর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে এবং ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এসব পরিবারের শান্তিপূর্ণ বসবাস ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
ভূমি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি কমিশনার, সীতাকুণ্ড থানার ওসি, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, উপপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা কমান্ডেন্ট, চট্টগ্রামের পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও আবুল খায়ের গ্রুপসহসহ ১৮ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সৈয়দা নাসরিন ও শাহিনুজ্জামান শাহিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, “বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উচ্ছেদ তৎপরতা সংক্রান্ত খবর-প্রতিবেদন তুলে ধরার পাশাপাশি উচ্ছেদ তৎপরতা বন্ধে বিবাদীদের আইনি ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা তুলে ধরেছি।
“বলেছি উচ্ছেদ তৎপরতার শিকার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের কথিত ৭৫ পরিবারের নিরাপত্তা সুরক্ষা নিশ্চিত না করে বিবাদীরা সংবিধানের ১৫, ৩১, ৩২ ও ৪২ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন। আমাদের কথা শুনে আদালত উচ্ছেদ তৎপরতা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেছেন।”
সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পাড়ায় বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে ওই এলাকা ছেড়ে না গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে আবুল খায়ের গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর-প্রতিবেদন দেখে প্রথমে বিবাদীদের আইনি নোটিস দেয় মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
নোটিসে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৭৫ পরিবারের শান্তিপূর্ণ বসবাস, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আবুল খায়ের গ্রুপসহ অন্যান্য দুর্বৃত্তদের উচ্ছেদ তৎপরতা বন্ধের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা দপ্তর থেকে নোটিসের জবাব না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার হাই কার্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করা হয়।
সূত্র: বিডিনিউজ