সীতাকুণ্ডের টমেটো রপ্তানি হচ্ছে মালয়েশিয়ায়

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে উৎপাদিত টমেটো প্রথমবার রপ্তানি হচ্ছে। প্রথম দফায় ১৩ টন টমেটো কন্টেইনারে করে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যাবে মালয়েশিয়ায়। এর আগে সবজিভাণ্ডারখ্যাত সীতাকুণ্ডে অনেক ধরনের সবজি রপ্তানি হলেও টমেটো রপ্তানি এই প্রথম।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সাত্তার এন্টারপ্রাইজ বিভিন্ন ক্ষেত ঘুরে বাহুবলী জাতের টমেটো রপ্তানির জন্য বাছাই করেছেন। সবজি রপ্তানিতে টমেটো যোগ হওয়ায় উৎফুল্ল সীতাকুণ্ডের মাঠ পর্যায়ের কৃষক। রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান তাঁরা। চট্টগ্রাম বন্দরের একেবারে কাছে অবস্থান হওয়ায় রপ্তানিকারকও খুশি।

জানতে চাইলে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সাত্তার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমি ও আমার বড় ভাই মোস্তফা গত ৫ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে টমেটো, আলুসহ বিভিন্ন সবজি সংগ্রহ করে মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছি। তবে এবারই আমরা টমেটো সংগ্রহ করেছি সীতাকুণ্ড পৌরসভা, বারৈয়াঢালা ও মুরাদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে। এখান থেকে ১৩ টন টমেটো রপ্তানি করছি আমরা।

তিনি বলেন, আমরা কৃষকদের কাছ থেকে পাইকারিতে ২০ টাকা করে টমেটো সংগ্রহ করেছি। এভাবে টমেটো পাঠালে কৃষক যেমন উপকৃত হবে তেমনি ডলার সংকটের এই সময়ে রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সরেজমিনে টমেটো রপ্তানি প্রক্রিয়া দেখতে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নুনাছড়া গ্রামে গেলে এক কৃষক মো. তাহের বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে টমেটো চাষ করি। এবার ১২০ শতক জমিতে বাহুবলী জাতের টমেটো চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। ইতোমধ্যে আমরা টমেটো বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছি। এর মধ্যেই কৃষি অফিসারের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানির জন্য টমেটো কিনতে আসলে আমরা তাদের কাছে টমেটো বিক্রি করেছি।

একই এলাকার কৃষক মো. নুর মোহাম্মদ বলেন টমেটো চাষ করে এবার লাভবান হয়েছি। এর মধ্যে এবার প্রথমবারের মতো আমাদের পরিশ্রমের সবজি টমেটো বিদেশে পাঠানোর তালিকাভুক্ত হওয়াটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। তাহের, নূর মোহাম্মদ ছাড়াও তাজুল ইসলাম, আবুল কাসেম, মো. হোসেন এবং মুরাদপুর গ্রামের মো. এখলাস উদ্দিন জানান, রপ্তানিকারক তাঁদের

সীতাকুণ্ড সবার কাছ থেকে বাহুবলী জাতের টমেটো কিনে নিয়ে গেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবীবুল্লাহ জানান, সীতাকুণ্ডে প্রচুর শাক-সবজি উৎপাদন হয়। এসবের মধ্যে শিম ও শিমের বিচি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে রপ্তানি হয়ে আসছে। তবে এবারই প্রথম শুরু হয়েছে টমেটো রপ্তানি। সীতাকুণ্ডে ১৯ শ কৃষক ৩৮০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ করেছেন। এ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদন হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি টাকা তিনি বলেন, এর মধ্যে বাহুবলী প্রজাতির ১৩ টন টমেটো যাচ্ছে। মালয়েশিয়ায়। সাত্তার এন্টারপ্রাইজ মুরাদপুর ও বারৈয়াঢালার অন্তত ১০ জন কৃষকের কাছ থেকে এসব টমেটো সংগ্রহ করে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠিয়েছেন। এখন থেকে নিয়মিত রপ্তানি হবে এই টমেটো। এ ভাবে নিয়মিত রপ্তানি হলে কৃষক ও দেশ উভয় উপকৃত হবে।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *