সীতাকুণ্ডের আম যাচ্ছে ইউরোপে

বাগানের কাঁচা আম বিক্রির জন্য ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন তরুণ মাহমুদ হাসান। সেটি দেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কাঁচা আম প্রথমবারের মতো রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ৭৫ কেজি আম ইউরোপের দেশ সুইডেন ও ইতালিতে পাঠানো হয়। আমগুলোর রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার তেজগাওয়ের বিএইচ ট্রেড নেয়। ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটি সীতাকুণ্ডের মাহমুদ হাসান নামের এক তরুণের বাগান থেকে এসব কাঁচা আম সংগ্রহ করেছেন।

গত রোববার বিকেলে সীতাকুণ্ডের পৌর সদরের দক্ষিণ ইদিলপুর এলাকায় মাহমুদ হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে কাঁচা আম সংগ্রহের পর জড়ো করা হয়েছে তাঁর বাড়ির উঠানে। প্রতিষ্ঠানটি। এরপর সেখান থেকে বাছাই করে আম ভরা হয়। চারটি কার্টুনে। পরে আমগুলো ঢাকার রপ্তানিকারক

মাহমুদ হাসান বলেন, তিনি বাছাই করে ৮৪ কেজি কাঁচা আম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি সেখান থেকে দ্বিতীয় দফা বাছাইয়ের পর ৭৫ কেজি আম রপ্তানি করবে। এর মধ্যে সুইডেনে পাঠানো হবে ২৫ কেজি, ইতালিতে পাঠানো হবে ৫০ কেজি। কাঁচা আম দেশ দুটিতে পাঠানোর চিন্তা কীভাবে মাথায় এল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘সীতাকুণ্ড ফ্রুট শপ’ নামের একটি পেজ রয়েছে তাঁর। সেখানে তিনি তাঁর বাগানের কাঁচা আম বিক্রির বিষয়ে পোস্ট করেছিলেন। ফেসবুকে সেটি দেখতে পেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে রপ্তানিকারক। প্রতিষ্ঠানটি। আলোচনার পর প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি রপ্তানিযোগ্য কাঁচা আম ১৫০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত

মাহমুদ হাসান বলেন, প্রায় ১২ একর পাহাড়ি জমিতে আমের বাগান রয়েছে তাঁর। সেখান থেকে এ বছর অন্তত ১০ হাজার কেজি আম পাওয়া যাবে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবার নমুনা হিসেবেই তাঁদের আম সংগ্রহ করেছে। প্রথম চালান সফল হলে আরও আম কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে

রপ্তানির ক্ষেত্রে এসব পণ্যের উৎস যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাকে প্রত্যয়নপত্র দিতে হয়। তিনি দুই দেশে রপ্তানির জন্য পৃথকভাবে দুটি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।

মো. হাবিবুল্লাহ কৃষি অফিসার বলেন, স্থানীয় ও বারি-১১ জাতের আগাম আমগুলোর প্রতিটির ওজন ১২০ থেকে ১৬০ গ্রাম। দেশে চলতি মৌসুমে কাঁচা আম রপ্তানি এটিই প্রথম। তিনি বলেন, প্রথম রপ্তানি সফল হলে উত্তরাঞ্চলের আম বাজারে ওঠার আগেই সীতাকুণ্ডের আরও কয়েক টন আম বিদেশে পাঠানো যাবে।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, উত্তরাঞ্চলের আম পাওয়া যাবে আরও অন্তত এক মাস পর। তাই রপ্তানির জন্য কাঁচা আম খুঁজছিল তাঁর প্রতিষ্ঠান। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাহমুদ হাসানের বাগানের আমের বিষয়ে খোঁজ পান তিনি।

তিনি বলেন, গুণগত মান ঠিক রাখতে কিছু শর্ত নিয়ে মাহমুদ হাসানের কাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হচ্ছে। দ্বিতীয়বার গুণগত মান যাচাই করে আমগুলো রপ্তানির জন্য প্যাকেটজাত করা হবে। ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের কাঁচা আমের ভালো চাহিদা রয়েছে।

মাহমুদ হাসান যখন বাড়ির উঠানে আম কার্টনভর্তি করছিলেন, তখন তাঁকে সহযোগিতা তাই উত্তরাঞ্চলের আম বাজারে আসার আগেই প্রতিকালে দেরেতে পাশেই ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবল্লাহ। তিনি জানান, সবজি, ফলসহ কৃষিপণ্য ইউরোপের বাজারে রপ্তানির ইচ্ছা রয়েছে তাঁর

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top