বহু কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি মিলেছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকেই দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকা পর্যটকবাহী জাহাজগুলো টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাহাজ মালিক সমিতির সঙ্গে এক বৈঠকের পর এই অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান। বৈঠকে জাহাজ মালিক, টুয়াক নেতৃবৃন্দসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বুধবার (১১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলাচল সংক্রান্ত এক বৈঠক আহ্বান করে জেলা প্রশাসন।
বৈঠক শেষে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ মালিক সমিতি স্কোয়াব’র সভাপতি তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, বৈঠকে প্রশাসন ও জাহাজ মালিকের এই সংক্রান্ত আলোচনা হয়। আলোচনার পর জাহাজ চলাচলে আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ জানান, অনুমতি পাওয়ায় আগামীকাল শুক্রবার প্রথম দিন এমবি পারিজাত ও রাজহংস নামের দুটি জাহাজ দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটক পরিবহন করে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্য যাত্রা করবে।িএছাড়াও কেয়ারি সিন্দাবাদসহ অনুমতি পাওয়া অন্যান্য জাহাজগুলো চলাচল করবে শনিবার থেকে।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সুফিয়ান জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার প্রথম দিন দুটি জাহাজ চলাচল শুরু করবে। এই দুই জাহাজের চলাচলের পর পরিস্থিতি ইতিবাচক পেলে পরদিন থেকে চলাচলের জন্য অন্যান্য জাহাজগুলোকে অনমুতি দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, নাফ নদীর নাব্যতা-সংকট ও নদীতে একাধিক বালুচর জেগে ওঠার কথা উল্লেখ করে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে আয়োজিত এক সেমিনারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
কিন্তু কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, বে-ওয়ান ও বার আউলিয়া নামের তিনটি জাহাজ চলাচল করে। এই তিন জাহাজে পর্যটক হয়রানি সীমা ছাড়িয়ে যায়। অভিযোগ উঠে, এই তিন জাহাজের সংশ্লিষ্টরা ষড়যন্ত্র করে নাব্যতা সংকটের অজুহাত তুলে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল করতে দেয়নি।
এদিকে, পর্যটনের ভরা মৌসুমের তিন মাসের বেশি সময় ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ রয়েছে। জাহাজ চলাচলের বিষয় কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় দ্বীপে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাসহ হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক ও এ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজে দায়িত্বরতদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।