বন্দর ব্যবহারীদের বহুল প্রতীক্ষার দিন শেষ হতে চলেছে। আগামীকাল রবিবার (১৫ জানুয়ারি) ট্রায়াল রান শেষে পরদিন ১৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ চলাচল। বন্দরের ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটি এবং সিসিটি ও এনসিটি জেটিতে ভিড়বে বড় বড় জাহাজ। এ যাত্রার মধ্য দিয়ে নতুন এক যুগে প্রবেশ করতে চলেছে বন্দর। অপরদিকে বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়বে সুযোগ সুবিধা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক সীতাকুণ্ড বার্তাকে বলেন, বড় জাহাজ ভেড়ানোর জন্য আমরা আজ বৈঠক করেছি। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। আগামীকাল পরীক্ষামূলকভাবে বন্দরে বড় জাহাজ নোঙর করানো হবে। পাশাপাশি পরশুদিন অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বড় জাহাজ চলাচল শুরু হবে। আমাদের দক্ষ পাইলটরাও প্রস্তুত রয়েছে। কাজেই এখন থেকে বেশি কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন বন্দরে জাহাজজটের যে সমস্যা ছিল সেটা এখন কেটে যাবে।
শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন সীতাকুণ্ড বার্তাকে বলেন, ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ চলাচল শুরু হলে আমাদের আমদানি-রপ্তানিকারকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। পাশাপাশি বন্দরে জাহাজজটও কমে যাবে।
এক সময় চট্টগ্রাম বন্দরে আসতো শুধু ৭ মিটার ড্রাফটের জাহাজ। ২০১৪ সাল থেকে বন্দর জেটিতে আসছে ৯ মিটার গভীরতা ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ।
লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘এইচআর ওয়েলিং ফোর্ড’ গত এক বছর ধরে তিনটি বিষয়ে জরিপ চালিয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে চ্যানেলের যে অবস্থা এবং জেটি যেভাবে রয়েছে তাতে বন্দরে ঠিক কত গভীরতাসম্পন্ন এবং দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো যায়, বন্দরের দুই তীরের কী পরিমাণ জায়গা জেটি বা ইয়ার্ড সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহার করা যায় এবং কোন ধরনের পদক্ষেপ নিলে বন্দরে সর্বোচ্চ কত গভীরতাসম্পন্ন এবং দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো যাবে— এ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে জরিপটি চলে।
গত এপ্রিল মাসে পাঠানো ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বন্দরের যে অবকাঠামো রয়েছে তা ব্যবহার করে ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো যাবে। তবে বহির্নোঙ্গর ও গুপ্তখালের সন্নিকটের বাঁকে কিছুটা কাজ করে নদীর দুয়েকটি পয়েন্টে ড্রেজিং করলে বন্দর চ্যানেলে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। এরপরই কর্ণফুলী নদীর মোহনায় গভীরতা বৃদ্ধির কাজ শুরু করে বন্দর। ১৬ জানুয়ারি বন্দর জেটিতে বড় জাহাজ নোঙর করে সফলতায় আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।