![বাকলিয়া শুঁটকির হিমাগারে বিস্ফোরণ, ১৬ ঘণ্টা ধরে বন্ধ গ্যাস বিদ্যুৎ বাকলিয়া শুঁটকির হিমাগারে বিস্ফোরণ, ১৬ ঘণ্টা ধরে বন্ধ গ্যাস বিদ্যুৎ](https://www.cvoice24.com/media/imgAll/2022September/339273321_1511605879664869_-2304191142.jpg)
নগরের বাকলিয়ার রাজাখালী এলাকার শুঁটকির একটি হিমাগারে (কোল্ড স্টোরেজ) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার রাত একটার দিকে ‘জনতা কোল্ড স্টোরেজে’ অ্যামোনিয়া গ্যাসের পাইপ থেকে বিম্ফোরণের পর আগুন লাগে। এরপরই রাজাখালী এলাকার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার ৪ ঘণ্টা পর আগুন নিভলেও এখনো সচল হয়নি বিদ্যুৎ-গ্যাসের লাইন। প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে ওই এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ গ্যাস না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।
নিজাম উদ্দিন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘গতরাত থেকে আমাদের এলাকায় কারেন্ট, গ্যাস কিছুই নাই। খবর নিয়ে জেনেছি কর্তৃপক্ষ লাইন বন্ধ করে রাখছে। কখন আসবে জানি না। এমনিতেই গরমে মানুষের জান যায় যায় অবস্থা। বাচ্চাদের অবস্থা আরও কাহিল। তার উপর এই ঘটনার কারণে গোটা এলাকায় কারেন্ট গ্যাস কিছুই নাই। রান্নাবান্না সব বন্ধ।’
সরজমিনে দেখা গেছে, ধসে পড়া ভবনের ভেতর থেকে পোড়া শুঁটকির বস্তা সরিয়ে নিচ্ছেন শ্রমিকরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিভিন্ন শুঁটকির বস্তা থেকে এখনো বের হচ্ছে ধোঁয়া। শুঁটকির এ হিমাগারে প্রায় ২০ জনের শুঁটকি মজুদ রাখা ছিল। এতে কমবেশি প্রায় সবার শুঁটকি নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থলে গ্যাস লাইনের লিকেজ ছিল কিনা তা তদন্তে আসে। পরিদর্শন শেষে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলসহ আশেপাশে চেক করে দেখেছি এখানে আমাদের কোনো সংযোগ লাইন ছিল না। যতটুকু দেখে বুঝলাম হিমাগারের অ্যামোনিয়া গ্যাসের পাইপ থেকে বিম্ফোরণ হয়। তবে কোনো সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা গত রাতে এই এলাকার গ্যাস লাইন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। যেহেতু আমাদের কোনো সমস্যা পাইনি তাই পুনরায় লাইন সচল করে দিবো।’
বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান দায়িত্বরত চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের বাকলিয়া বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান। পরবর্তীতে কল সেন্টারের এক কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আশেপাশের তিন জায়গার বৈদ্যুতিক সংযোগ লাইন কাটা পড়েছে। আমরা সচল করার জন্য কাজ করছি। কখন ঠিক হবে সেই বিষয়ে সঠিক করে বলতে পারছি না।’
অন্যদিকে, মাছ থেকে শুঁটকি তৈরি করতে কোল্ড স্টোরেজে অ্যামোনিয়া গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এ গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে বিস্ফোরণের পর কোল্ড স্টোরেজটিতে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। তবে আগুন নিভে গেলেও এখনো পোড়া শুঁটকির স্তুপ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। বিস্ফোরণে দোতলা ভবনটির একপাশের দেয়ালের কিছু অংশ ও জানালা ধসে পড়ে এবং এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চারজন।
ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ মিয়া সিভয়েসকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি অ্যামোনিয়া গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে করে ভবনের একপাশের দেয়াল ধসের ঘটনা ঘটে। সেখানে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তার আগে বলা সম্ভব না।’
Leave a Reply