ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুন্ন করছে নামধারী ছাত্রলীগ: আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়া

মোঃ জয়নাল আবেদীন,সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি:বাংলাদেশের প্রাচীন একটি সংগঠন ছাত্রলীগ।ছাত্রলীগের জন্ম আওয়ামীলীগের অনেক অাগে তা হয়তো অনেকেই জানেন না। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনের অনেক ইতিহাস এবং অর্জন রয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এই ছাত্রলীগকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এদেশের পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ও সকল দুঃশাসন অপঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।জেল খানার অভ্যন্তরে থেকেও ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এবং উনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ছিলেন। তখন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। এই সংহতি প্রকাশ করার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বহিষ্কার করেন। তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। অনেক ছাত্রনেতা গোপনে গোপনে ভিসির বা সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে বহিষ্কারাদেশ থেকে বেঁচে ছিল এবং তাদের ছাত্রত্ব রক্ষা করেছিল। কিন্তু একমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার জন্য আপস করেননি। সম্ভবত সেই বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি থাকা কালীন সময়ে। সেই থেকে ছাত্রলীগ সকল প্রকার আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করেছে। এছাড়া ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে, ছয় দফা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগ রাজপথে অলঙ্কিত করেছিলেন। সকল প্রকার আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকাসহ সারাদেশব্যাপী সমগ্র রাজপথ রঞ্জিত করেছিলেন এই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ করা ছিল গর্বের বিষয়। আমরা দেখেছি আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে ছাত্রলীগ কিভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। পঁচাত্তর পরবর্তী যখন আসে তখন আওয়ামীলীগ করা ছিল নিষিদ্ধ সংগঠনের মত। আওয়ামীলীগ,ছাত্রলীগ করি এই কথা শুনলে আমাদের অভিভাবকরা পর্যন্ত মেনে নিতে চাইনি। সে দুঃসময়ে আওয়ামীলীগ যখন ঘরমুখো হয়েছিল তখন আমরা ছাত্রনেতা ছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামীলীগ যখন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে সারাদেশে মাঠ ছেড়ে দিয়েছিল তখন ঢাকা থেকে শুরু করে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগ আবার রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগ প্রমাণ করল ছাত্রলীগ একটি ঐতিহাসিক সংগঠন হিসেবে এর যে ভূমিকা তা পালন করেছিল। সে ধারাবাহিকতায় পঁচাত্তর পরবর্তী ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগকে উজ্জ্বীবিত করে অনুপ্রাণিত করে এবং তাদের সাহস দেয় রাজপথে নামার জন্য। ছাত্রলীগের এই ধারাবাহিক আন্দোলনে,শ্রমিক লীগ,কৃষকলীগ,আওয়ামীলীগ জেগে উঠেছিল। সর্বোপরি ২১ বছর ধারাবাহিক সংগ্রামের পর আমরা আওয়ামীলীগ জনগণের ম্যান্ডেট দিয়ে আবার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছি। অস্ত্রের বলে নই, কোন অপশক্তি ব্যবহার করে নই, সামরিক শক্তি ব্যবহার করে নই, বিডিআর এর মাধ্যমে নই জনগণের ম্যান্ডেট দিয়ে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসেছে। আন্দোলনের পরতে পরতে আন্দোলনের স্তরে স্তরে আন্দোলনের পর্যায়ে পর্যায়ে একটি সংগঠন বার বার এই বাংলায় ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছিল সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কিন্তু এই ছাত্রলীগের কোনো বদনাম যখন আমরা শুনতে পাই তখন আমাদের মন বেদনায় আক্রান্ত হয়।মাঝে মাঝে ছাত্রলীগের কিছু কুলাঙ্গার এমন কিছু ঘটনা ঘটায় তখন পুরো ছাত্রলীগ কলঙ্কিত হয়। যেমন সিলেটের সিএমসি কলেজে নামধারী ছাত্রলীগ ধর্ষণের মতো নির্লজ্জ ঘটনা ঘটিয়েছে।এরা হাইব্রিড যারা অন্যান্য সংগঠন থেকে ছাত্রলীগে যোগদান করেছে।এই ধরনের ঘটনা বরদাশত করা হবে না। ছাত্রলীগ নামধারী অসংখ্য আছে যারা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত।যারা দখলবাজী, টেন্ডার, চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিবস উপলক্ষে উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।