সীতাকুণ্ডে পৈতৃক সম্পত্তি জবরদখল ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ নারী ইউপি সদস্য দম্পতির বিরুদ্ধে

বার্তাঃসীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্যম বাঁশবাড়িয়া নুনাবিল গ্রামে এক ব্যবসায়ীর পৈতৃক সম্পত্তি জবরদখল করে গৃহ নির্মাণ ও
প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য লাকি আক্তার ও স্বামী মুসলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোরপূর্বক পৈতৃক সম্পত্তি দখল করে ঘর নির্মাণ, নিত্য দিন গালিগালাজ, হুমকি-ধামকি, বারবার সালিশী বৈঠকে নিয়ে অপদস্ত করাসহ নানাভাবে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও সন্তানদের হয়রানির অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী হাফেজ আলমগীর।
এ ঘটনায় বাঁশবাড়িয়া বাজারের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী হাফেজ আলমগীর হোসেন ১৩ এপ্রিল বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নারী ইউপি সদস্য ও তার স্বামী মুসলিম উদ্দিনকে ঘর নির্মাণের কাজ স্থগিত করার নির্দেশ দেন। কিন্তুু থানার সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিরোধপূর্ণ জায়গায় মাটি ভরাট ও গৃহ নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন নারী ইউপি সদস্য লাকি আক্তার।

১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্যম বাঁশবাড়িয়া নুনাবিল গ্রামের সালাদার বাড়ির উঠানের খালি জায়গা নিয়ে মোঃ মোজাম্মেল হকের পুত্র হাফেজ আলমগীর হোসেন ও মুসলিম উদ্দিনের মাঝে বিরোধ চলমান। বৃদ্ধ মোজাম্মেল হক তার পুত্রদ্বয়ের মাঝে এখনো ভাগবাটোয়ারা /সম্পত্তি বন্টন না করায় বাড়ির উঠানের জায়গা নিয়ে তাদের মাঝে ঝগড়াঝাটি হয়ে আসছে। সম্প্রতি মোজাম্মেল হকের বসত ঘরের সম্মুখ দক্ষিণের খালি জায়গায় পুকুর থেকে মাটি এনে ভরাট করতে থাকে হাফেজ আলমগীর হোসেন এর ছোট ভাই মুসলিম উদ্দিন। একইসাথে সে উক্ত খালি জায়গায় একটি নতুন ঘর নির্মাণের প্রস্তুুতি নিচ্ছিল। ছোট ভাইয়ের একক ও একতরফা সিদ্ধান্তে ঘর নির্মাণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন বড় ভাই হাফেজ আলমগীর হোসেন। ১৩ এপ্রিল সকালে হাফেজ আলমগীর হোসেন তার ছোট ভাই মুসলিম উদ্দিনকে ওই জায়গায় মাটি ভরাট ও ঘর নির্মাণ না করার অনুরোধ করলে সে চরম ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে মুসলিম উদ্দিন ও তার দুই পুত্র হাফেজ আলমগীরকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। পরে তাদের অত্যাচারে বাড়ি ঘরে যাওয়া-আসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় ব্যবসায়ী হাফেজ আলমগীর হোসেন। নিরুপায় হয়ে তিনি সীতাকুণ্ড মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করে আইনের আশ্রয় নেন।

এ বিষয়ে হাফেজ আলমগীর হোসেন বলেন, আমার ছোট ভাই একজন জুলুমবাজ প্রকৃতির লোক। আমাদের ভিটা বাড়ি এখনও বন্টন হয়নি। আমার বাবা অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। এমতাবস্থায় সে বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে জোর করে উঠানে ঘর নির্মাণ করছে, যা তার প্রাপ্তির চেয়ে কম। এসময় আলমগীর হোসেন আরো বলেন, মূলত তার স্ত্রী লাকি আক্তার মহিলা মেম্বার হওয়ায় সে আমার উপর প্রভাব খাটাচ্ছে। দলবল নিয়ে জনপ্রতিনিধির ক্ষমতার অপব্যবহার করছে সে। আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে, তার দুইটা ছেলেকে লেলিয়ে দিয়েছে আমাকে অপদস্ত করতে। আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই, আমার অধিকার বুঝে পেতে চাই।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত মুসলিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে সে সাংবাদিকদের সাথে মারমুখী আচরণ করে। জোরপূর্বক ভাইয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঘর করছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে সে প্রতিবেদককে হুমকির সুরে বলেন আপনি বেশি কথা বলতেছেন! কি করবো না করবো আমার ব্যাপার, আপনি কে? এসময় মুসলিম উদ্দিন সাংবাদিকদের সাথে চরম উত্তেজিত হয়ে
কথা বলে এবং তার ভাই আলমগীর হোসেনকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সীতাকুণ্ড মডেল থানার এসআই রবিচরণ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, তাদেরকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব বিরোধ বৈঠকে মিমাংসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সূত্রঃ বিডিসি ক্রাইম


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *