কক্সবাজারে সৈকত সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু

একদিকে সমুদ্রের গর্জন, অন্যদিকে বসেছে সাংস্কৃতিক আয়োজন। দেখা গেল সমুদ্রসৈকতে ঘোরাঘুরি বাদ দিয়ে হাজার হাজার মানুষ এসে জড়ো হয়েছে সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে। ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের অ্যাক্রোবেটিক শো, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারীদের বর্ণময় নৃত্য পরিবেশনাসহ সাংস্কৃতিক আয়োজন মুগ্ধতা নিয়ে উপভোগ করছে দর্শক।কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে বসেছে দুই দিনের সৈকত সাংস্কৃতিক উৎসব। এই উত্সব কক্সবাজারে বেড়াতে আসা মানুষের জন্য আনন্দের নতুন উপলক্ষ্য নিয়ে হাজির হয়েছে।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের টানে মানুষ কক্সবাজারে ছুটে এলেও সন্ধ্যার পরে সেখানে কিছুই করার থাকে না বলে অগণিত মানুষের নিরন্তর অভিযোগ শোনা যায়। সৈকত সাংস্কৃতিক উৎসব যেন সেই অভিযোগের গ্লানি মেটাতেই বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে হাজির হয়েছে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য তিন জেলার পাঁচ শতাধিক শিল্পী তাদের পরিবেশনা নিয়ে হাজির হয়েছেন। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন। এদিকে অনুষ্ঠান মঞ্চের পাশেই মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩২ ফুট প্রস্থের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে লাবণী পয়েন্টের প্রবেশমুখে। চারুশিল্পী সংসদের শিল্পীদের সহযোগিতায় এ প্রতিকৃতি চিত্রিত হয়েছে। ‘শিল্প সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনার অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সৈকত সাংস্কৃতিক উত্সব শুধু বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছেই নয়, কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিয়েছে উৎসবের আমেজ। বিকালে বর্ণাঢ্য র‌্যালি কক্সবাজার শহর প্রদক্ষিণ করে। এরপর প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আদিবুল ইসলাম ও পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত পাল বিশু, একাডেমির কালচারাল অফিসার সুদিপ্তা চক্রবর্তী প্রমুখ।

উৎসবের উদ্বোধন করে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘আমরা সংস্কৃতির প্রবাহকে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চাই। তৃণমূলে পৌঁছে দিতে চাই সংস্কৃতির আলো। সারা দেশের লাখ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে আসে। যারা রাজধানীর বাসিন্দা নন, তাদের কাছে দেশের শিল্পীদের আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশনা তুলে ধরা এ আয়োজনের লক্ষ্য। এমনিভাবে দেশ জুড়ে এ ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *